বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সঙ্কট ও সম্ভাবনা: বর্তমান প্রেক্ষিত


বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সঙ্কট ও সম্ভাবনা: বর্তমান প্রেক্ষিত

গণমাধ্যম বা সাংবাদিকতার বহুমুখী সংকট নিয়ে কথা বলা যায় বিস্তর। বিতর্কও করা যায়। সাংবাদিকতার পন্ডিতজনেরা বলেন, এই সংকট এবং সংকট নিয়ে বিতর্কের শুরু সাংবাদিকতার জন্মলগ্ন থেকেই। এই উপমহাদেশে ১৭৮০ সন থেকে, যখন উপমহাদেশের প্রথম সংবাদপত্রটি প্রকাশিত হয়। সেটির শুরু ও শেষ হয় নানা বিতর্কের মধ্য দিয়েই।

আমরা সংকট বলছি বটে, আসলে এসবই হচ্ছে সাংবাদিকতায় চ্যালেঞ্জ। সাংবাদিকতা কি কুসুমাস্তীর্ণ পেশা? কখনও কি ছিল? সব সংকট বা চ্যালেঞ্জ পায়ে দলেই তো সাংবাদিকতা এগিয়েছে যুগ যুগ ধরে। সময় পাল্টেছে, সংকট বা চ্যালেঞ্জও ভিন্ন চেহারা নিয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকতা থেমেতো থাকেইনি বরং এগিয়েছে আরও নতুন উজ্জলতা নিয়ে।

সাংবাদিকতা হচ্ছে সবচাইতে জীবন্তু ও আধুনিক পেশা। বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা, সাংবাদিকতা কখনই মূর্খজনের পেশা নয়। কিছু মৌলিক কাঠামোই সাংবাদিকতাকে আধুনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পেশার শক্ত ভিত্তি দিয়েছে। সাংবাদিকতাকে দাঁড়াতে হয় এই মৌলিক ভিত্তির উপর। এই ভিত্তি ও সংকট সম্পর্কে জানা না থাকলে সাংবাদিকতা হয়তো করা যাবে, কিন্তু অবস্থানটি হয়ে যাবে টলটলায়মান।

১. স্বাধীনতার সংকট: মুক্ত গণমাধ্যম

সাংবাদিকতার বুনিয়াদী ভিত হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। বড় ক্যানভাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হলেও এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে মুক্ত গণমাধ্যম এবং চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটি। পৃথকভাবে তিনটি বিষয়ের কথা বলা হলেও, চূড়ান্ত বিচারে তিনটি মিলিয়েই মুক্ত গণমাধ্যমের চেহারাটা স্পষ্ট হয়। একটি সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতাটি যদি নিশ্চিত না থাকে, সমাজটি যদি চিন্তা ও বিবেকের জন্য খোলা প্রান্তর অবারিত করতে না পারে, সেই সমাজে স্বাধীন বা মুক্তগণমাধ্যম বিকশিত হতে পারে না। সাহসী ও বুদ্ধিবৃত্তিক সাংবাদিকতার ভিত্ও দৃঢ় হয় না।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলতে আমরা বুঝব যে, একটি গণমাধ্যম তার বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে, উপস্থাপনার ক্ষেত্রে এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে কি না। এই ‘স্বাধীন’ শব্দটি খুব জটিল। স্বাধীনতা মানে কতটা স্বাধীনতা? স্বাধীনতা মানে কার স্বাধীনতা – যিনি লিখছেন তার স্বাধীনতা, নাকি যিনি টাকা বিনিয়োগ করছেন তার স্বাধীনতা? এই প্রশ্নের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতার চেহারাটি স্পষ্ট হবে না।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ এবং আরও কয়েক অনুচ্ছেদে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, বাক্ স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এই স্বাধীনতা ভোগ করা যাবে কতিপয় আইনী শর্তসাপেক্ষে। অর্থাৎ কোন স্বাধীনতাই নিরংকুশ নয়, এমন কি মত প্রকাশের স্বাধীনতাও। এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই সীমিত পরিসরে বড়মাপের মাপের কিছু সংকট বা চ্যালেঞ্জের চেহারাটি তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

২. দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার সংকট : মাপকাঠি কি?

আজকাল প্রায়শ:ই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার বিষযটি উচ্চারিত হয় জোরেসোরে। দায়িত্বশীলতা প্রকৃত পক্ষে সাংবাদিকতার সাথে এমনভাবে ঘনিষ্ট যে, সে জন্য পৃথক কোন সংজ্ঞার প্রয়োজন হয় না। কারন সাংবাদিকতা পেশাটিই দায়িত্বশীল পেশা। প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকতা কখনও ‘অ-দায়িত্বশীল’ হতে পারে না। যারা দায়িত্বহীনভাবে সাংবাদিকতা পেশাকে ব্যবহার করেন, তারা আর যাই হোক ‘সাংবাদিক’ নন। বিষয়টি এমন যে, একজন সৈনিক যদি তার হাতিয়ারটি খেয়াল খুশি মত ব্যবহার করেন তাহলে তাঁকে আর সৈনিক বলা যাবে না। কারণ একজন সৈনিক শেখেন এবং জানেন কখন, কোথায়, কেন কিভাবে হাতিয়ার ব্যবহার করতে হয়। হাতে হাতিয়ার আছে বলেই তিনি খেয়াল খুশি মত যেখানে সেখানে সেটির ব্যহার করতে পারেন না। যদি করেন, স্বেচ্ছাচারিতার জন্য অবশ্যই তাঁকে শাস্তির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। তেমনি সাংবাদিকতাতেও স্বেচ্ছাচারিতার কোন সুযোগ নেই। দেশ পরিচালনায় একজন স্বেচ্ছাচারী শাসককে স্বৈরাচার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তেমনি দায়িত্বজ্ঞানহীন একজন সম্পাদক বা সাংবাদিকও স্বৈরাচারী হয়ে ওঠতে পারেন। তাদের জন্য তাদের নিয়ন্ত্রিত গোটা গণমাধ্যমটিও প্রকৃত গণমাধ্যমের চরিত্র হারাতে পারে।

অবিভক্ত ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়ে, রুয়ান্ডায় জাতিগত দাঙ্গকাকালে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক সাংবাদিক বা সংবাদ মাধ্যমের নাম অনায়াসে তুলে ধরা যায়, যারা দায়িত্বশীল আচরণ করেনি। এর পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমতো বটেই, সকল গণমাধ্যমকে সমাজে প্রচলিত নৈতিকতা মানতে হয়। অনগ্রসর সমাজের মানুষকে শিক্ষিত করার মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম সমাজের সকল কূপমন্ডুকতা দূর করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সমাজে প্রচলিত নৈতিকতার সাথে তাকে সহাবস্থান করতে হবে সতর্কতার সাথে। নৈতিকতা নিয়ে অনেক কথা বলা যায়। তবে নৈতিকতার কোনো সুনর্দিষ্টি বৈশ্বিক সংজ্ঞা নেই। যে নৈতিকতা ইউরোপে সঠিক সেই নৈতিকতা হয়তো ভারতে সঠিক নয়, যে নৈতিকতা উত্তর আমেরিকায় প্রচলিত তা হয়তো বাংলাদশে গ্রহণযোগ্য নয়। এক একটি সমাজে নৈতিক মূল্যবোধ নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তার নানা সমাজতাত্বিক ও নৃতাত্ত্বিক ব্যাখ্যাও আছে।

ধর্ম নৈতিকতার একটি বড় উপাদান। পৃথিবীর সকল ধর্মেই মানবিকতার কথা বলা হয়, অহিংসার কথা বলা হয়। ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের হলেও প্রায় সব ধর্মেই কতিপয় শুদ্ধাচার বিষয়ে একটি মতৈক্য দেখা যায়। ধর্মবিশ্বাস যাই হোক এই শুদ্ধাচার, সদাচার এক ধরনের নৈতিকতার ভিত্ দেয়। মুক্ত চিন্তার দর্শন চর্চ্চাও এ ক্ষেত্রে বড় সহায়ক।

একটি সমাজ নৈতিক মূল্যবোধ কিভাবে গ্রহণ করে সেটিও লক্ষ্য করার বিষয়। একজন সাংবাদিক যে সমাজে কাজ করেন সেই সমাজ কতটা শিক্ষিত, কতটা অগ্রসর, কতটা উদার, সমাজের আত্মীকরণের ক্ষমতা কতটা দৃঢ়, এসব বিষয় উদারভাবে বিশ্লেষন করার ক্ষমতা নৈতিকতার দৃঢ় ভিত্ তৈরি করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হিসেব ছাড়াও একটি সমাজে প্রবহমান সংস্কৃতি নৈতিকতার একটি বড় আশ্রয়। রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃত্ব যদি অগ্রসর চিন্তা না করে বা ভিন্নমত ধারণ করার মতো উদারতা না দেখায়, তাহলে সেখানেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নানাভাবে বিঘ্নিত হয়। তৈরি হয় নানামুখী সংকট। আমাদের গণমাধ্যমও সেই সংকটের বাইরে নয়।

৩. ভয়ের সংকট: জয়ের শাসন

ভয়ের শাসন, জয়ের শাসনের কথা বহু আগে বলেছেন কবিগুরু। এই যে নানামুখী সংকটের কথা বলা হলো, তার দৃশ্যমান রূপ একটি সমাজের চেহারা দেখেই বুঝা যায়। যখন সমাজে ভয় ছড়িয়ে দেয়া হয় তা’ থেকে কি সাংবািদক, কি গণমাধ্যম কেউ মুক্ত থাকতে পারে না।মনের মধ্যে যে ভয় বাসা বাঁধে এবং এই ভয়কে মাথায় রেখে যে পরিবেশ তৈরি হয়, তাকেই গণমাধ্যমের ভাষায় বলা হয় ‘সেলফ সেন্সরশিপ’। বাংলাদেশে এই সেলফ সেন্সর শীপের স্রষ্টা পরাধীনতাকালের বৈরী সংস্কৃতি ও দীর্ঘ সামরিক শাসন। সামরিক শাসন মানেই কঠোর আর আনুষ্ঠানিক সেন্সরশিপ। পাকিস্তান আমল থেকে থেকে তা আমাদের পিছু নিয়েছে, স্বাধীনতার পরও এই জুজু আমাদের পিছু ছাড়েনি। অনানুষ্ঠানকি সামরিক শাসন, উপরে সিভিল পোশাক ভেতরে উর্দিধারী শাসকরাও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ছেন। এই যে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠনকি সামরিক বা স্বৈরশাসন, সেলফ সেন্সরশিপের জন্য তাই প্রথমত দায়ী। দু:খের বিষয়, আমরা এখনও এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারিনি যে রাজনীতি এগুলো একসঙ্গে ঝেড়ে ফেলে দিতে পারে। তাই আন্তর্জাতিকভাবে বলা হয়, বাংলাদেশের গণমাধ্যম ‘চধৎঃরধষ ঋৎবব- আংশিক স্বাধীন’। সার্বক্ষনিক ভয়কে মাথায় রেখে সৃজনশীল সাংবাদিকতা পথ চলতে পারে না। এই ভয় আসে বহুমুখী উৎস থেকে।

৪. নিরাপত্তার সংকট, বিচারহীনতার সংস্কৃতি : দায় কার

আন্তর্জাতিকভাবে একটি দেশের গণমাধ্যমের অবস্থা কিছু সূচক দিয়ে মাপা হয়। প্রথম সূচক হলো- সরকার কি আইন দ্বারা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে? এমন কোনো নীতি কি গণমাধ্যমের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে যা’ স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ সংকুচিত করছে? অন্যায়ভাবে কোনো সাংবাদিককে আটক করা করা হচ্ছে ? সাংবাদিক হত্যা বা নির্যাতন হচ্ছে – তার কোন বিচার হচ্ছে না ? এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে সরকারকেই।

কিন্তু ’ভয়’ কি শুধু সরকার দেখায়? সমাজে কি আর কোন শক্তি নেই যারা ভয় ছড়িয়ে দিতে পারে? নিশ্চয়ই আছে। এদের বলা হয় ’নন স্টেট একটর’। এরা কি সাংবাদিককে হত্যা করছে, হুমকি দিচ্ছে? এটাও একটা সূচক। দেশে ধর্মীয় জঙ্গি গোষ্ঠী যখন সাংবাদিকদের নামের তালিকা তৈরি করে হত্যার হুমকি দেয়, সেটিও বড় ধরনের ভয় ছড়িয়ে দেয়া। কোন এক গোষ্ঠী যখন বলে, কোনো নারী সাংবাদিক তাদের অনুষ্ঠান কভার করতে পারবে না, এটাও এক ধরনের হুমকি। একজন সাংবাদিক শুধু নারী হওয়ার কারণে একটা সংগঠনের অনুষ্ঠান কভার করতে পারবে না- এটাও পেশাগত স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। নিজের মত প্রকাশ বা প্রচার করে না বলে একটি গণমাধ্যমকে বয়কট করার হুমকিও গণমাধ্যম বা সাংবাদিককে ভয় দেখানো, চাপ সৃষ্টির কৌশল। ব্লগারটা মেরে ফেলা হচ্ছে তার মতকে পছন্দ হচ্ছে না বলে, এটাও চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার ওপর আঘাত।

সম্পাদকের বক্তব্য মন:পুত হচ্ছে না বলে সাংবাদিক সন্মেলন করে তাকে গালি দেয়া হচ্ছে – এটি একজন সম্পাদকে ধমক দেয়ার সবচাইতে অশোভন চেষ্টা। তথ্যকে তথ্য দিয়েই মোকাবেলা করতে হয়, ভয় বা শক্তি দেখিয়ে নয়।

এদেশে সব রাজনৈতিক দলগুলো বিরোধী দলে থাকাকালে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে যতটা সোচ্চার হয়েছেন দু:খজনকভাবে ক্ষমতায় গিয়ে সেই উচ্চকণ্ঠ তারা ধরে রাখতে পারেননি। এই সরকারের আমলে তিনজন সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়েছে। ’সমকাল’এর ফরিদপুর প্রতিনিধি গৌতম দাস হত্যাকান্ডের বিচার নিম্ন আদালতে সম্পন্ন হয়েছে, মানিক সাহা হত্যার বিচার নিম্ন আদালতে সম্পন্ন হয়ছে, যা’ তার পরিবার গ্রহণ করেনি। খুলনার আবুল হোসনে খোকন হত্যা মামলায় পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। সাড়ে চার দশকে দেড় ডজনের বেশি সাংবাদিক হত্যা করা হয়ছে, কিন্তু বিচার হয়নি। সাগর -রুনি বড় উদাহরন। সরকারের র্ব্যথতা আছে। আবার উল্টো দিকে এই সরকার ফৌজদারি দন্ডবিধি সংশোধন করছে। আগের আইনে একজন সাংবাদিককে অফিস থেকেও গ্রেপ্তার করার যে বিধান ছিল র্বতমানে তা’ সংশোধন করা হয়েছে। বলা হয়ছে, অপরাধ করলে কোর্ট সমন জারি করবে, সরাসরি গ্রেফতার করা যাবেনা। এটা বড় র্অজন। সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করা হয়েছে। তথ্য অধিকার আইন হয়েছে, তথ্য কমিশন হয়েছে। সম্প্রচার আইন করার চেষ্টা হচ্ছে, প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন হচ্ছে, যুগোপোযোগী করা হচ্ছে। এ সবই ভালো উদ্যোগ। তবে পরিসংখ্যান ও বাস্তবতা বলে, বাংলাদেেশ সাংবাদিকরা বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে আছেন। ঢাকার বাইরে সাংবাদিকরা রয়েছেন তূলামূলক বেশি ঝূঁকির মধ্যে।

৫. আইনী সংকট : আইন আছে, আইন নাই …

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আইনী সংকটের তিনটি অংশ। একটি আইন না থাকার সংকট, দ্বিতীয় সংকট পুরনো আইন চালু রাখা, তৃতীয়টি নতুন আইনের অপপ্রয়োগ। দেশে এখনও সম্প্রচার আইন হয়নি, তা’হলে সম্প্রচার মাধ্যমগুলো লাইসেন্স পেলো কি করে? এসব চলছে কি করে ? সম্প্রচার মাধ্যমে যারা কাজ করেন তাদের পেশাগত পরিচয় বা চাকরী কোন্ আইন দিয়ে সুরক্ষিত?

একটা জোড়া তালির জবাব পাওয়া যাবে হয়তো কিন্তু বাস্তবতা হলো আইন নেই অথচ সবচাইতে প্রভাবশালী গণমাধ্যম চলছে ইচ্ছে বা মর্জির উপর। এই হলো আইন না থাকার সংকট।

বিশ্বাস না হয়, আইনের বই ঘেঁটে দেখুন কত পুরনো আইন বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে বা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে চোখ শাসায়। একটা উদাহরন দেই, পোস্ট অফিস সংক্রান্ত আইনে বলা হচ্ছে : গোয়েন্দা বিভাগ ডাকঘরে আপনার পোষ্ট করা যে কোন চিঠি খুলে দেখতে পারেন। আইনের লোকেরা কবে বুঝবেন, যাদের চিঠিতে সন্দেহজনক বিষয় থাকতে পারে তারা আজ আর কেউ পোস্ট অফিসে চিঠি পোষ্ট করেন না। তা’হলে এই আদ্যিকালের পুরনো আইনটি টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন কি?

এবার আসা যাক নতুন আইন প্রসঙ্গে। নিশ্চয়ই যুগের প্রয়োজনে নতুন আইন করতে হবে, কেউই ওই বাস্তবতা অস্বীকার করে না। সময়ের প্রয়োজনেই আইসিটি আইন করা হলো। কিন্ত গণমাধ্যমের জন্য চোখ রাঙ্গালো ৫৭ ধারা। যখন আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা তৈরি হলো- বলা হলো- অপব্যবহার হবে না। কিন্তু বাস্তবতা চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। এমন কোনো আইন করা যাবে না যা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে সংকুচতি করে; সংবিধানের মূল চেতনার বিরুদ্ধে যায়। ৫৭ ধারা ছিল এমন সাংঘর্ষিক। আসলো ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন। বলা হলো, ৫৭ ধারা থাকবে না। কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে ৫৭ ধারা ছড়িয়ে দেয়া হলো নানা ধারা, উপধারায়। আমরা সংসদীয় কমিটি পর্যন্ত কথা বললাম। বলা হলো, এই আইনের অপপ্রয়োগ হবে না; কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এই আইন সংসদে পাস করার সময় মন্ত্রী বললেন, এই আইন অনুসরন করার জন্য সারা পৃথিবী নাকি মুখিয়ে আছে। পৃথিবীর কোন্ কোন্ দেশ এই আইন অনুসরন করেছে জানা নেই, তবে এই আইন প্রণয়নের পর বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নেমে গেছে তিন ধাপ।

৬. জবাবদিহিতার সংকট: কার জবাবদিহিতা, কার কাছে

আইন, দায়িত্বশীলতা, নৈতিকতার পর পরই আসে গণমাধ্যমের জবাবদিহিতার প্রসংগটি। গণমাধ্যম বা সাংবাদিক কার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে, কার কাছে জবাবদিহি করবে? এই নিয়ে ধোঁয়াশা। সরকার চায় জবাবদিহিতা থাকুক তার কাছে, মালিক চায় তার কাছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সংবাদ মাধ্যমের দায়বদ্ধতা সমাজের প্রতি। সমাজের পাঠক বা র্দশকই তো তার ভোক্তা। তারাই মূল্যায়ন করবেন। ভালো লাগলে গ্রহণ করবেন, না হলে প্রত্যাখ্যান করবেন। সেই গণমাধ্যম টিকে থাকবে না, যেটি মানুষের আস্থা র্অজন করতে পারবে না। আস্থা র্অজন করা সম্ভব হবে যদি সংবাদ মাধ্যমটি নৈতিকতার দিক থেকে পরিশীলিত হয়, পেশাদারিত্বের দিক থেকে পরিশীলিত হয়, সত্য প্রকাশে সাহসী- আপসহীন হয়। আবার রাষ্ট্রের অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতির গণমাধ্যমের দায়বোধ থাকা জরূরী। মনে রাখতে হবে, কোন স্বাধীনতাই নিরঙ্কুশ নয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর বিদ্বেষ ছড়ানো সমার্থক নয়। কোন তথ্য যাচাই না করে তার উপর ভিত্তি করে কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়। সমাজে ন্যায্যতার পক্ষে গণমাধ্যমকে থাকতে হবে। তবে সমাজকেও শিক্ষিত করে তোলা গণমাধ্যমের দায়িত্ব। শিক্ষিত সমাজই বুঝবে গণমাধ্যমের কাছে কতটা প্রত্যাশা করা সঙ্গত। তাই বলা হয়, শিক্ষিত সমাজে সাংবাদিকরা বেশি নিরাপদ।

৭. সততার সংকট : ভালো সাংবাদিকতাই রক্ষা কবচ

সততা ছাড়া কোন গণমাধ্যম বহু মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে না। বৈশ্বিকভাবেই এখন সংবাদ মাধ্যমের বড় সংকট ‘ফেক নিউজ’। ফেক নিউজ বা অসত্য সংবাদ প্রকাশের প্রবণতা আমেরিকা থেকে শুরু হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদশে শুরু হয়েছিল ’পেইড নিউজ’ দিয়ে। ভারতে নির্বাচনের সময় বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে মিডিয়া কিনে ফেলা হতো। পেশাদারী সাংবািদকতার জন্য এখনকার বড় সংকট এটি। প্রশ্ন হলো- সাংবাদিকতা কি টিকে থাকতে পারবে, নাকি ফেক নিউজের স্রোতে ডুবে যাবে। যখন পেইড নিউজ বিতর্কের শুরু হয়, তখন বলা হয়েছিল পেইড রিপোর্টার, পেইড বার্তা সম্পাদক এবং পেইড সম্পাদক সংবাদ মাধ্যমকে ডোবাচ্ছে। কিন্তু যখন খোদ মালিক ’পেইড’ হলেন তখন আবার ঘুরে দাঁড়ালেন প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকরাই। এই সংকট মোকাবেলায় একমাত্র সমাধান, পেশাদারী সাংবাদিকতা। সাংবাদিকতার মৌলিক শর্ত গুলোই সাংবাদিকতাকে রক্ষা করেত পারে। এ কথায় আস্থা রাখতেই হবে যে, ভালো সাংবাদিকতাই ভালো সাংবাদিকতার রক্ষা কবচ।

৮. মুনাফা ও পেশাদারিত্বের সংকট : যে গল্পের শেষ নেই

গণমাধ্যমে এই সংকটটি শুরুতে এতটা ছিল না। কিন্তু মুক্ত বাণিজ্যের পৃথিবী এখন মালিকের মুনাফালোভ ও সাংবাদিকেদের পেশাদারিত্বের সংকটকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সংখ্যার বিচারে অবশ্যই বলতে হবে, বাংলাদেেশ গণমাধ্যমের পরিসর বিশাল। কিন্তু একটা রাষ্ট্রে কত বেশি সংবাদমাধ্যম আছে, সেটা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার একমাত্র সূচক নয়। সূচক হচ্ছে, যে সংবাদমাধ্যম প্রকাশিত বা সম্প্রচারতি হচ্ছে সেগেুলো পেশাদারিত্বের সাথে পরিচালিত হচ্ছে কিনা এবং টিকে থাকতে পারছে কি না।

দেশে সংবাদ মাধ্যমের সংখ্যা বাড়ছে ‘বানের লাহান’। সংবাদ মাধ্যমের মালিক হওয়া এদেশে এখন ”স্ট্যাটাস সিম্বল” বা ’সিম্বল অব পাওয়ার’। মালিকরা নিজেরাই সম্পাদক হয়ে যাচ্ছেন। সম্পাদকরাও সাংবাদিকদের অভিভাবক হওয়ার চাইতে মালিকদের আজ্ঞাবহ হতেই বেশি স্বচ্ছ্যন্দবোধ করছেন। কম বেতনে, বিনা বেতনে অপেশাদারদের সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের পেশাদারি উৎকর্ষের বিষয়টি চিন্তা করা হচ্ছে না। সংবাদমাধ্যম ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দল বিশেষের ক্ষমতা ও সুবিধার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে পেশাদার সাংবাদিকতার জায়গাটা সংকুিচত হয়ে গেছে। শুধু আর্থিক মুনাফা নয়, মালিকদের এজেন্ডা থাকে নানাভাবে লাভবান হওয়ার। এই গ্যাড়াকলে পেশাদার সাংবাদিকদের চিড়েচ্যাপ্টা দশা। অনেকে কর্পোরেট পূঁজির কথা বলেন কিন্তু আসলে আমাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কর্পোরেট চরিত্রের ছাপ দেখিনা। এখনও আমাদের পূঁজি মুৎসুদ্দি চরিত্রের মধ্যেই আটকে আছে।

গণমাধ্যমের মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে তথ্য জানানো এবং তথ্য জানানোর মাধ্যমে মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। যদি গণমাধ্যমের কাজ এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে জটিলতা থাকে না। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় যখন গণমাধ্যমকে এর বাইরে বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়। এ থেকে উত্তরণের পথ হলো- পেশাদার সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। শিল্পপতি অর্থ বিনিয়োগ করবেন কিন্তু সংবাদ মাধ্যম পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবেন অবশ্যই পেশাদার সাংবাদিক এবং তিনি মালিকের আজ্ঞাবহ হবেন না। এর ব্যত্যয় হলেই সংবাদ মাধ্যম তার চরিত্র হারায়।

এ থেকে উত্তরণের জন্য গণমাধ্যমের মালিকানার চরিত্র ও যোগ্যতারও একটা মাপকাঠি থাকা প্রয়োজন। সাংবাদিক হওয়ার জন্য যোগ্যতা র্অজন করতে হয়, প্রাতিষ্ঠানিক নীতি-নৈতিকতার শর্ত পূরণ করতে হয়, তেমনি গণমাধ্যমের মালিক হওয়ার জন্যও কিছু শর্ত পূরনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। শুধু টাকা হলেই মিডিয়ার মালিক হওয়া যাবে না, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা, দল- পরিবার- প্রতিষ্ঠানের উর্ধে থাকার পরশিীলিত রূচিবোধ, সুস্থ সংস্কৃতি বোধ- থাকতে হবে।

হত্যা, নির্যাতন, হামলার বাইরে এখন এক নতুন সংকটের মুখোমুখি সাংবাদিক সমাজ এই মালিকানার কারনে। দীর্ঘ পেশাদারিত্বের মধ্য দিয়ে যখন একজন সাংবাদিক একটি প্রতিষ্ঠানকে বড় জায়গায় নিয়ে যান, শুধু বেতন বৃদ্ধি বা বয়স বৃদ্ধির অজুহাতে তিনি কর্মক্ষম থাকা অবস্থাতেই তাকে চাকুরচ্যিুত করা হয়। এভাবে চাকরচ্যিুতির ফলে শেষ জীবনে সাংবাদিককে ত্রিমুখী সংকটে পড়তে হচ্ছে ১. আর্থিক সংকট ২. পরিচয় সংকট ৩. নিরাপত্তার সংকট।

মালিকেরা মনে করেন, নতুন কর্মী নিলে তাকে দিয়ে কম বেতনে কাজ করানো যাবে। কিন্তু যে ব্যক্তি দীর্ঘদিন তার প্রতিষ্ঠানে শ্রম, মেধা, সাহস বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটিকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসলেন তার কথা মালিক বিবেচনা করেন না। এটা অনৈতিক ও অমানবিক। বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় বয়স অবসরের মাপকাঠি হতে পারে না। নৈতিক স্খলন বা আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত না হলে, একজন সাংবাদিককে শুধু বয়স বা বেতন বৃদ্ধির অজুহাতে চাকুরচ্যিুত করা যাবে না। তিনি যদি কর্মক্ষম থাকেন, তাহলে অবসরের বয়স সীমায় পৌঁছালেও তাকে প্রতিষ্ঠানে কোনোভাবে সংযুক্তির মধ্যে রাখতে হবে। যেমন বিশ্ববদ্যিালয়ে প্রবীণ শিক্ষকদের প্রফেসের ইমেরেটিাস বা এ ধরনের পদে সংযুক্ত রাখা হয়।

৯. নতুন ও সনাতনীদের সংকট : দ্বন্দ নয়

অস্বীকার করার যোগাড় নেই, প্রযুক্তি আজকের সংবাদ মাধ্যমের সামনে উন্মুক্ত করেছে অস্তহীন আকাশ। এই অবারিত সুযোগ খুলে দিয়েছে প্রতিযোগিতার বিশাল প্রান্তর। সোস্যাল মিডিয়া খুবই গতিশীল। কিন্তু স্পষ্ট করেই বলতে চাই, প্রথাগত মিডিয়া ও স্যোশাল মিডিয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। স্যোশাল মিডিয়া হচ্ছে একটি কমিউনিকিশেন টুল মাত্র, সেখানে সম্পাদনা প্রতিষ্ঠান নেই, পেশাদারিত্ব নেই। তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার যে শক্তি সোশ্যাল মিডিয়ার আছে তার সাথে যদি পেশাদারিত্বের মেল বন্ধন না করা যায় তা’হলে পাঠক, দর্শক, ব্যবহারকারী অনেক বেশি হলেও আস্থার সংকট সেখানে থাকবেই। ততদিন বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পেতে প্রথাগত মিডিয়ার ওপরই নির্ভর করতে হবে। কাজেই দ্বন্দ নয়, সামাজিক গণমাধ্যমগুলোকেও পেশাদারিত্বের প্রশ্নে আরও অনেক ধাপ এগুতে হবে। নতুন পুরোনোর এই এই সংকট কাটিয়ে ওঠতে হবে দুই পক্ষকেই।

১০. সাংবাদিকদের সংগঠন : অপেশাদাররা দূর হোক

কি আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তি, কি মর্যাদার লড়াইয়ে জয়ী হওয়া, কি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা – বাংলাদেশের সাংবাকিদকের এই সকল অর্জন এসেছে সাংবাদিক সংগঠনের হাত ধরেই। কারণ পেশাদার সাংবাদিকরাই এ সকল সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা ভেতর থেকে সংকটের চিত্রটি বুঝতেন। সে কারনে মালিক, সরকার বা যে কোন মহলের সঙ্গে আলোচনায় আপসহীন অবস্থান নিতে পারতেন। কিন্তু এখন সেখানে হতাশার চিত্র দেখি। যিনি জীবনে কোনদিন পেশাদার সাংবাদিকতা করেননি, ওয়েজবোর্ডের সুপারিশে কিভাবে বেতন নির্ধারিত হয় তা’ জানেন না, সেই চক্রের কাছে কোন কোন সাংবাদিক সংগঠন জিম্মি। পেশাদার সাংবাদিকদের নেতৃত্বই কেবল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে পেশার কল্যানে নিয়োজিত করতে পারে। সাংবাদিকতার সকল সংকটে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর ভূমিকা আজও গুরুত্বপূর্ণ। আগে সংগঠন ছিল কম, নেতারা ছিলেন তুখোড় সাংবাদিক, কর্মসূচীতে ধার ছিল বেশি কিন্তু এখন সংগঠন অনেক বেশি, অনেক নেতাই কার্ডধারী, তাই অনেক সংগঠনই ভোঁতা, বক্তৃতা সর্বস্ব। বহু সংগঠনে নেতারা এখন পদ, প্লট, প্রণোদনার কাছে নত। অনেকে পেশাদার সাংবাদিকতার চাইতে মলিকের বা ক্ষমতাধরদের এজেন্ডার পাহাড়াদার হিসেবই বেশি ব্যস্ত। এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরী।

এই তালিকা আরও বড় করে আরও দীর্ঘ আলোচনা করা যায়। তবে এত সংকটের মধ্যেও দৃপ্ত প্রত্যয় নিয়েই বলি: পেশাদারী সাংবাদিকতা টিকে থাকবে তিনটি স্তম্ভের উপর। বিষয় বস্তুুর বৈচিত্র্য, উপস্থাপনরে ভিন্নতা ও আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার। সংকট বা চ্যালেঞ্জ থাকবে, কিন্তু সাহসী, যোগ্য ও ভালো সাংবাদিকদের হাত ধরেই সাংবাদিকতা এগিয়ে যাবে।

লেখাঃ মনজুরুল আহসান বুলবুল, সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব।