১১ বছরে দেশের সংবাদভিত্তিক চ্যানেল এটিএন নিউজ


১১ বছরে দেশের সংবাদভিত্তিক চ্যানেল এটিএন নিউজ

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশেষ কোন আয়োজন নয়, বরং শুভাকাঙ্ক্ষী ও সতীর্থদের অনানুষ্ঠানিক আড্ডায় পালিত হলো এটিএন নিউজের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী 

‘বাংলার ২৪ ঘণ্টা’ স্লোগানে ২০১০ সালের ৭ জুন চ্যানেলটি তার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। 

সমগ্র বার্তাকক্ষ জুড়েই ছিল শুভ্র শুদ্ধতায় উৎসবমুখর। সরেজমিনে এটিএন নিউজের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সবাই সাদা রংয়ের পোষাক পরে এসেছেন। বার্তাকক্ষে সবার মধ্যেই উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হয়। কাজের চাপের মধ্যেও সবাই মিলে ছবি তোলা, হাসি ঠাট্টার মধ্য দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছেন।  

১১ বছরের অর্জন ও পথচলা সম্পর্কে জানতে চাইলে এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান প্রভাষ আমিন বলেন, “এক যুগে পা রাখছে এটিএন নিউজ। যত স্বপ্ন দেখেছিলাম বাংলাদেশের এবং বৈশ্বিক বাস্তবতায় ততটা হয়তো পূরণ করা যায়নি, তবে আমরা সবসময় সাধারণ মানুষের চ্যানেল হতে চেয়েছি এবং সাধারণ মানুষের মতো ভাবতে চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে  থাকতে, মানুষের কথা বলতে। 


একটা টেলিভিশন চ্যানেলের ১১ বছর বাংলাদেশের বাস্তবতায় খুব অল্প সময় না আবার অনেক বেশি সময়ও না। বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় এখন একটা ক্রান্তিকাল চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা যেভাবে বাড়ছে সে জায়গায় মূল ধারার সংবাদ মাধ্যমগুলো ইতোমধ্যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেছে। সে জায়গায় এটিএন নিউজ গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পার্থক্যটা সুস্পষ্ট রাখার চেষ্টা করেছে। আমরা চেষ্টা করেছি সস্তা জনপ্রিয়তার পেছনে না ছুটে সবসময় সাধারণ মানুষের কথা বলার। আমরা চাইবো সে পার্থক্যটা যেন থাকে। সাংবাদিকতার ওপর মানুষের যে আস্থা সেটি যেন থাকে। এই লড়াইটা এটিএন নিউজ একা করবে না। সে লড়াইয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার ও অন্যান্য গণমাধ্যমকে আমরা আমাদের পাশে চাইবো”।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংগঠনের পক্ষ থেকে এটিএন নিউজকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনেকে ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির হন এটিএন নিউজের কার্যালয়ে। হাসিমুখে তাদের সকলকে আপ্যায়ন করা হয় এটিএন নিউজের পক্ষ থেকে। এসময় তাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন এটিএন নিউজের কর্মকর্তারা। 

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে এটিএন নিউজের সিনিয়র প্রতিবেদক আলী আরাফাত বলেন, “দেখতে দেখতেই ১১ বছর হয়ে গেল অথচ মনেই হয় না ১১ বছর ধরে এখানে আছি। এটিএন নিউজ একটা পরিবারের মতো। পরিবারের সাথে যতো সময়ই থাকি না কেন সেটাকে যেমন দীর্ঘ সময় মনে হয় না, তেমনি এটিএন নিউজে যতো দিনই থাকি না কেন তাকে খুব অল্প সময়ই মনে হয়। 

ঈদ, পুঁজা কিংবা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো সকল উৎসব আমরা একসাথেই পালন করি। এভাবেই বহুদিন এটিএন নিউজে কাজ করে যেতে চাই এবং সামনের সকল উৎসব একসাথে পালন করতে চাই”। 

নারীদের কাজের পরিবেশ নিয়েও সন্তুষ্ট টেলিভিশনটির নারীকর্মীরা। এ বিষয়ে এটিএন নিউজের স্টাফ রিপোর্টার সাদিয়া ইসলাম বলেন, “এটিএন নিউজ শুধুমাত্র গণমাধ্যম নয়। এটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নয়েরও জায়গা। ব্যক্তিগত ভাবে ৫ বছর ধরে আমি এখানে কাজ করছি। আজকের এই দিনটি না থাকলে এটিএন নিউজের যাত্রা হতো না তাই আজকের দিনটি আমাদের জন্য অনেক বেশি গৌরবের। এখানে নারীকর্মী যে সম্মান, নিরাপত্তা এবং শান্তি নিয়ে কাজ করে তা এক কথায় অসাধারণ”। 

এটিএন নিউজের প্রতিষ্ঠাকালীন অভিভাবক সিইও হিসেবে ছিলেন টেলিভিশন সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও দেশ বরেণ্য মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীর। তিনি টেলিভিশনটির অগ্রযাত্রায় প্রধান ভূমিকা পালন করেন। ২০১১ সালের ১৩ অগাস্ট এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।