সংগীত পরিচালক, সুরকার ফরিদ আহমেদ মারা গেছেন


সংগীত পরিচালক, সুরকার ফরিদ আহমেদ মারা গেছেন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত সংগীত পরিচালক, সুরকার ফরিদ আহমেদ মারা গেছেন। ১৩ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ ১১ এপ্রিল থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সকালে হাসপাতাল থেকে ফোন করে পরিবারকে জানানো হয় তিনি মারা গেছেন।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঢাকার দুটি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসাসেবা নিচ্ছিলেন তিনি। গত মাসের শেষে ভীষণ জ্বর ছিল সুরকার ও সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদের। প্রথম দুইবারে করোনা নেগেটিভ এলেও তৃতীয়বারে করোনা পজিটিভ হন গুনী এই সুরকার । এরপর ২৫ মার্চ রাতে তাঁকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। ১৭ দিন পরে হাসপাতাল বদল করা হয়। করোনায় ফরিদ আহমেদের ফুসফুসের ৬০ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছিলো।

অনেক কালজয়ী গানের সুরকার ফরিদ আহমেদ। স্কুলবন্ধু বায়েজীদের কাছে গিটারে তাঁর হাতেখড়ি। এরপর ফিরোজ সাঁইয়ের হাত ধরে পেশাদার সংগীতাঙ্গনে তাঁর পথচলা। ব্যান্ড ‘স্পন্দন’থেকে ফিরোজ সাঁই ছেড়ে দিলেও তাঁর সঙ্গে থেকেই তিনি গিটার বাজাতেন। লিটন অধিকারী রিন্টুর লেখা ও কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘তুমি ছাড়া আমি যেন মরুভূমি’ গানে সুর করে প্রশংসিত হন ফরিদ আহমেদ। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত বহু গানের সুর তৈরি করেছেন তিনি। করেছেন সংগীতায়োজনও।

বিশেষ করে তার উল্লেখযোগ্য গান হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’-এর টাইটেল সং ‘কেউ কেউ অবিরাম চুপি...’, কুমার বিশ্বজিতের ‘মনেরই রাগ অনুরাগ’, ‘আমি তোরই সাথে ভাসতে পারি মরণ খেয়ায় একসাথে’, রুনা লায়লার ‘ফেরারী সাইরেন’, রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠে ‘দলছুট প্রজাপতি’, চ্যানেল আইয়ের ‘আজ জন্মদিন’, ‘ক্ষুদে গানরাজ’, ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’, ‘সেরা কণ্ঠ’ প্রতিযোগিতার থিম সং, সুমী শবনমের জনপ্রিয় গান ‘ললিতা’, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে সিনেমার গান ‘তুমি আমার জীবনের গহীনে’সহ আরও অনেক জনপ্রিয় গানের সুরকার তিনি। নূর হোসেন বলাইয়ের ‘নিষ্পত্তি’ চলচ্চিত্রে প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন ফরিদ আহমেদ।

সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ২০১৭ সালে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘তুমি রবে নীরবে’ সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করে এ পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এই সিনেমার পরিচালক মাহবুবা ইসলাম। এই সিনেমার আবহ সংগীতের কাজও করেন ফরিদ আহমেদ।