সঙ্গীত শিল্পী মিতা হক মারা গেছেন


সঙ্গীত শিল্পী মিতা হক মারা গেছেন

করোনায় আক্রান্ত হয়ে জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী মিতা হক মারা গেছেন। ১১ এপ্রিল, রোববার সকাল ৬.২০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৯ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছায়ানটে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান দীর্ঘদিনের সতীর্থরা। পরে জানাযা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে কেরানীগঞ্জের বড় মনোহারিয়ায়, বাবা-মায়ের কবরের পাশে।

মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালে। তিনি বাংলাদেশ বেতারের সর্বোচ্চ গ্রেডের তালিকাভুক্ত শিল্পী। ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন মিতা হক। তার এককভাবে মুক্তি পাওয়া অ্যালবাম ২৪টি।এর মধ্যে ১০ টি বাংলাদেশ থেকে এবং বাকি ১৪ টি ভারত থেকে। তিনি প্রথমে তার চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সানজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৪ সালে অংশ নেন বার্লিন আন্তর্জাতিক যুব ফেস্টিভালে! ১৯৭৬ সাল থেকে তবলা বাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেন তিনি। পরের বছর থেকেই তিনি নিয়মিত সঙ্গীত পরিবেশনা করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে।

সঙ্গীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২০ সালে একুশে পদক পান মিতা হক। ২০১৬ সালে লাভ করেন শিল্পকলা পদক। সুরতীর্থ নামে একটি সঙ্গীত প্রশিক্ষণ দল গঠন করে সেটির পরিচালক ও প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। এছাড়া ছায়ানটের রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগের প্রধান ছিলেন মিতা হক। ছিলেন রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদের সহ-সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেন।

১৯৬৩ সালে জন্ম নেয়া এই গুনি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী গত ২৫ মার্চ করোনা আক্রান্ত হন,ভর্তি হন হাসপাতালে। এরপর তিনি নেগেটিভ হয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে আসেন বাসায়। পাঁচ বছর ধরে তার কিডনি রোগে ভুগছিলেন তিনি। গত শনিবার ডায়লাইসিসের সময় তার প্রেসার ফল করে। এর পর বাসায় আবার তার প্রেসার ফল করে। তখন হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা জানান, মিতা হক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মিতা হককে ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও তিনি মারা গেলেন আজ ভোরে।

রেখে গেলেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের অন্য এক গায়কি। তার নিপুণ গায়কিতেই তিনি বেঁচে থাকবেন বাঙলার অগণিত রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রেমীর হৃদয় গহীনে। তার স্বামী খালেদ খান যুবরাজ মারা গেছেন আগেই। তাঁর চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী।