ফিরে দেখা: ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫


ফিরে দেখা: ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

বই মেলা ২০১৫.....

আনসার আল ইসলামের ফতোয়া বোর্ডের মিটিং... বুঝিয়ে দেয়া হয় হিট লিস্টে থাকা লেখক, প্রকাশকদের বিষয়ে করনীয় কি। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসা ভাড়া নেয়া হয় বই মেলার কাছাকাছি জায়গায়। টার্গেট লেখক ও প্রকাশকদের তথ্য সংগ্রহে কাজ শুরু করে আনসার আল ইসলামের ইন্টেল শাখার সদস্যরা।

১৭ই ফেব্রুয়ারী ২০১৫...

বই মেলা উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসেন অভিজিৎ রায়। মুহুর্তেই খবর পৌছে যায় জঙ্গী সংগঠনটির কাছে, শুরু হয় জরুরী বৈঠক..... বৈঠকে ফতোয়া বোর্ড। ইন্টেল টিমের সদস্যদের ব্রিফ করেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতা, চাকুরিচ্যুত মেজর জিয়া। জানান, অভিজিৎ রায় একমাত্র টার্গেট। বই মেলায় অভিজিৎ রায়কে অনুসরন করে আনসার আল ইসলামের জঙ্গীরা। এভাবে প্রতিদিনই অভজিত রায়ের গতিবিধি অনুসরন করতে থাকে তারা। জঙ্গিদের চোখ এড়ায়নি অভিজিৎ'র ইন্দিরা রোডের বাসাটিও।

২৫ শে ফেব্রুয়ারী....

অভিজিৎ রায়কে হত্যার উদ্দ্যেশে বিভিন্ন পয়েন্টে অপারেশন শাখার সদস্যরা অবস্থান নেয়। তবে অভিজিত বই মেলায় না আসায় পরিকল্পনা ব্যার্থ হয়।

২৬শে ফেব্রুয়ারী....

বিকালে সস্ত্রীক বই মেলায় আসেন অভিজিত রায়... সতর্ক দৃষ্টিতে ইন্টেল ও অপরেশন শাখার সদস্যরা। বই মেলা থেকে বের হয়ে অভিজিৎ রায় টিএসসি অভিমুখী... এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফুটপাতে প্রস্তুত অপারেশন শাখার সদস্যরা।

সময় রাত ৮ঃ ৪৫ মিনিট...

অভিজিৎ ও তার স্ত্রী কে ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকে জঙ্গীরা.... দূরে দাঁড়িয়ে হত্যাকান্ডটি সমন্বয় করে চাকুরিচ্যুত মেজর জিয়া।

রক্তাক্ত অভিজিৎ রায়....পড়ে থাকে ফুটপাতে... সাহায্যের জন্যে আকুতি স্ত্রীর...

মুমুর্ষ অভিজিৎকে কিছুক্ষনের মধ্যেই নেয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে মৃত ঘোষনা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

তদন্তে নামে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশ। সংগ্রহ করে তথ্য উপাত্ত। দায় স্বীকার করে নিষদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলাম। সম্পূর্ণ ক্লুলেস একটি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে কাউন্টার টেরোরিজমের কর্মকর্তারা। তাদের প্রচেষ্টায় একে একে ধরা পরে অধিকাংশ হত্যাকারী। তদন্ত শেষে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। বিচার শুরু হয় ঘাতকদের।

১৩ই মার্চ, ২০১৯... 

চার বছরের তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয় । ৬ জনকে আসামী করা হয় যাদের মধ্যে দুইজন পলাতক। বাকিরা কারাগারে।

১লা আগস্ট, ২০১৯...

আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ হলে বিচার শুরু হয়।

১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২১...

বিচারে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।