সোস্যাল মিডিয়ায় "প্রজেক্ট" গুজব


সোস্যাল মিডিয়ায় "প্রজেক্ট" গুজব

ঢাকার অদূরে মাওয়ায় ‘প্রজেক্ট হিলশা’ নামক রেস্টুরেন্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। খাবারের অতিরিক্ত মূল্য, দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী, ভেতরকার পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচনার কেন্দ্রে ‘প্রজেক্ট হিলসা’।

শুধু হিলশা নয় এরকম অদ্ভুত স্থাপত্য রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। তবে বাংলাদেশে প্রজেক্ট হিলশার পরেই বিশ্বের বিভিন্ন অদ্ভুত স্থাপত্যগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা গুজব। সোস্যাল মিডিয়াতে সেসব স্থাপত্যগুলোকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজেক্ট হিসাবে দাবি করা হচ্ছে। এই লেখায় থাকছে তেমন কিছু স্থাপত্যের আসল পরিচয়।

“প্রজেক্ট তেলাপিয়া”/ ভারতের জাতীয় মৎস উন্নয়ন বোর্ড, হায়দ্রাবাদ, ভারত

‘প্রজেক্ট হিলসা’ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’ নামে আরও একটি স্থাপনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। ‘প্রজেক্ট হিলসা’র সাথে মিলিয়ে অনেকে ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’কে রেস্টুরেন্ট হিসেবে দাবী করছেন। অনেকে মানের দিক থেকেও ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’কে ‘প্রজেক্ট হিলসা’ থেকে এগিয়ে রাখছেন। বস্তুত ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’ বলতে কিছু নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’ নামে যে ভবনের ছবি ছড়ানো হচ্ছে এই নামে কোন ভবনই নেই।

বাংলাদেশে ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’ নামে কোন কিছুই নেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায় মাছ আকৃতির যে ভবনটির ছবি ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সেটি ভারতের জাতীয় মৎস উন্নয়ন বোর্ডের (এনএফডিএ) প্রধান কার্যালয়। হায়দারাবাদে অবস্থিত ভবনটি ২০১২ সালে নির্মিত হয় এবং তখন থেকেই সেখানে অফিস করেন ভারতীয় মৎস উন্নয় বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মৎস আকৃতির এই ভবনটির নাম ‘ফিশারিজ ভবন’। এ ভবনে দাপ্তরিক কাজের বাইরে আর কোন কাজ করা হয় না। দর্শনার্থী কিংবা প্রয়োজন ছাড়া কেউই এখানে প্রবেশও করতে পারে না।

“প্রজেক্ট কাকঁড়া”/ ইকোলজি সেন্টার অব কুশান, চায়না

ক্রাস্টিয়ান বাসিদের ঐতিহ্য ও তাদের বাসস্থানকে পরিচয় করিয়ে দিতে একটি স্থাপত্য বানানো হয়। যেটি চীনের ইয়াংচেং লেকের পূর্ব তীরে অবস্থিত। এই স্থাপত্যটিতে তিনতলা একটি জাদুঘর। এখানে সংগ্রহ করা আছে ক্রাস্টিয়ান বাসিদের বিভিন্ন ঐতিহ্য।

“প্রজেক্ট কুকুর”/ ডগ বার্ক পার্ক ইন, যুক্তরাষ্ট্র

কিছুদিন আগেই সোস্যাল মিডিয়ায় একটি স্থাপত্যকে বলা হচ্ছে “প্রজেক্ট কুকুর”। কারন স্থাপত্যটি দেখতে একটি বিগল কুকুরের মত। বিগল কুকুরের একটি জাত। তবে আসল ঘটনা হচ্ছে, এই স্থাপত্যটি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। যুক্ত্ররাষ্ট্রের এক দম্পত্তি এই বাড়িটি তৈরি কওরে। পয়সা খরচ করে এখানে পর্যটকরা রাত কাটাতে পারবে তাঁর প্রিয় কুকুরকে নিয়ে। এই বাড়িতে ব্যবহৃত সবকিছুইতে রয়েছে কুকুরের ডিজাইন।

“প্রজেক্ট হাঁস”/ দ্যা বিগ ডাক হাউস, যুক্তরাষ্ট্র

সোস্যাল মিডিয়াতে একটি ছবি ঘুরছে, যেখানে লেখা আছে প্রজেক্ট হাঁস। সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি সাদা বড় হাঁসের স্থাপত্য। তবে আসলে এই স্থাপত্যটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্ল্যান্ডার্সে অবস্থিত। ১৯৩০ এবং ১৯৩১ সালে এই স্থাপত্যটি তৈরি করে বাড়িটির মালিক মার্টিন মুরে। পরে বিভিন্ন সময়ে স্থাপত্যটি একাধিক জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়।

“প্রজেক্ট চা”/ দ্যা মিউজিয়াম অফ টি কালচার, চায়না

২০০৫ সালে চায়ের পাত্র এবং চায়ের চাপের আদলে চায়নায় এই স্থাপত্যটি তৈরি করা হয়। এই জাদুঘরে আছে ম্যাকাউ, চায়না এর ঐতিহ্য। ১১,৫৮০ স্কয়ার ফিট এই ভবনটি চায়নার অন্যতম আকর্ষনীয় স্থাপত্য।

“প্রজেক্ট ডাইনোসর”/ কাবাজন ডাইনোসরস, ক্যালিফর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র

কাবাজন ডাইনোসরস পৃথিবীর অন্যতম আকর্ষনীয় মিউজিয়াম। যা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। এই জাদুঘরে রয়েছে বিভিন্ন ডাইনোসোর আকৃতির ভবন। কয়েকটি ডাইনোসরের পেটের ভিতরে ঢুকে গেলেই দেখা মিলবে রেস্টুরেন্ট, দোকান সহ বিভিন্ন স্থাপত্য। যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের জন্যে অন্যতম বিনোদনের জায়গা এই কাবাজন ডাইনোসরস। জাদুঘরের ভিতরে ডিনি ও রেক্স নামে দুইটি বিখ্যাত ডাইনোসর স্থাপত্য রয়েছে। ১৯৬৪ সালে ডিনি ডাইনোসর স্থাপত্যের কাজ শুরু হয়ে তা শেষ হয় ১৯৭৫ ন্সালে। আর রেক্সের কাজ শুরু হয় ১৯৮১ সালে। যা শেষ হয় ১৯৮৬ সালে।