ব্যক্তি আক্রোশেই হিন্দু বাড়িঘরে হামলা


ব্যক্তি আক্রোশেই হিন্দু বাড়িঘরে হামলা

ফেসবুকের পোস্টকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাও গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা। গত বুধবার ১৭ মার্চ এ হামলার ঘটনা ঘটে।

জেলার শাল্লা থানার হেফাজতের সমর্থকদের দাবী ঐ পোস্টটিতে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে কটাক্ষ করেছে গ্রামের যুবক ঝুমন দাস আপন। সে কারণেই এই হামলা চালানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় হামলার আগের দিন (১৬ মার্চ) রাতে ঝুমন দাস আপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, “হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে মঙ্গলবার ফেসবুকে কটূক্তিমূলক একটি পোস্ট দেন ওই গ্রামের যুবক ঝুমন দাস আপন। সে রাতেই স্থানীয়রা তাকে স্থানীয় শাঁসকাই বাজারে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন এবং হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় নেতারা এ ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ অবস্থার মধ্যেই আজ সকালে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের কয়েকশ হেফাজত সমর্থক বাসিন্দা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘবদ্ধ হন। তারপর তারা ওই যুবকের বাড়িসহ আশেপাশের কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে হামলা চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে”।

তবে হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা অনিল চন্দ্র দাসের দাবী পূর্ব শত্রুতার জেরেই এ হামলা হয়েছে। হামলার নেতৃত্বদানকারী হিসেবে স্বাধীন মেম্বর নামক এক ব্যক্তির নামও উঠে এসেছে।

নোয়াগাঁও গ্রামবাসী জানান, তাদের গ্রামের পাশের একটি জলমহালের ইজারাদার স্বাধীন মিয়া। তিনি গত জানুয়ারি মাসে জলমহাল নীতিমালা উপেক্ষা করে ওই জলমহালটি সেঁচে মাছ ধরেন। এতে এলাকার কৃষকদের পানি সেচের সমস্যা দেখা দিলে মামুনুলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টেটাস দেয়া যুবক গ্রামের ঝুমন দাস আপন স্বাধীন মিয়ার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেন ও তার আইনবিরোধী কাজের সমালোচনা করেন। এতে প্রশাসন জলমহাল নীতিমালা উপেক্ষা করে মৎস্য আহরণ করায় স্বাধীন মিয়াকে আর্থিক জরিমানা করে। এতে ক্ষুব্দ হয়ে স্বাধীন মিয়া আপন দাসসহ গ্রামবাসীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

এ হামলাকে পূর্ব পরিকল্পিত উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধা অনিল চন্দ্র দাস বলেন, “স্বাধীন মেম্বার জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরায় আমাদের গ্রামের লোকজন বাধা দিয়েছিল। প্রশাসন তাকে আর্থিক জরিমানাও করে। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সেই ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের গ্রামে হামলা ও লুটপাট করেছে”।