দেশের মফঃস্বল সাংবাদিকতা


দেশের মফঃস্বল সাংবাদিকতা

একের ভেতর পাঁচ তবুও মফ:স্বলের ওরা এবং কূলীন সাংবাদিক

কখনো ডাক্তার, কবিরাজ, হেকিম, শিক্ষক, ছাত্র, কৃষক, বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় মাওলানা, মুজুর, মুটে, শিল্পী, অভিনেতা, রাজনীতিক, নেতা, পতিত, পতিতা, ভন্ড, দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাস, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ, পিতা, সন্তান, সমাজপতি, বাউল, বৈরাগী, আস্তিক, নাস্তিক, উভলিংগ, ডুবুরী, নাবিক, ফকির, ধনী, পথচারী, চোর, ডাকাত, রাজা, বাদশা, চাকুরে কখনো পিয়ন।

এভাবে যাপিত জীবনের সব ক্ষেত্র বা ভুমিকার সামনে-পেছনে বুঝতে হয়, বোঝাতে হয় মফ:স্বল সাংবাদিকদের। আর সাংবাদিক তো বটেই ক্যামেরাম্যানও হতে হয় । এমন একের ভেতর পাঁচ গুণ থাকলে তবেই না, আমি, আপনি, আমরা মফ:স্বলের সাংবাদিক। 

এতশত'র স্বার্থক রুপায়নের পরেও কিন্তু ঢাকার সাংবাদিকদের বা সেখানকার একাডেমিক সাংবাদিকদের মন ওঠে না, যেন শরীরের কালো-ধলায় সৌন্দর্য়ের মাপকাঠি!

ওরা আমাদের দেখে নাক সিঁটকায়, চোখ বাকা করে, ঘুরে বসে! কথা বলতে চাইলে ফোনই রিসিভ করে না, করলেও ঠিক আছে ঠিক আছে বলে রেখে দেয়, গলার টোন থাকে কাকের চেয়েও কর্কশ, যেন কত যুগের শত্রু বা অপরাধী বা মফ:স্বলের ওরা !

পত্রিকা, সম্প্রচার মাধ্যম বা টিভি রিপোর্টে মফ:স্বল কে ভাগ করে দেয় দেশ-জনপদ, গ্রাম-বাংলা, দেশের খবর এমন সব তকমা জুড়ে।

বিশ্ব টা যখন গ্লোবাল ভিলেজ, ব্যানার হেড যখন টেকনাফ বা তেঁতুলিয়ার তখন এমন তকমা, সীমারেখা আমাদের ব্যাথিত করে, আহত করে, জাত-পাত, কূলীন-অকূলীন, অস্পৃশ্য-স্পৃশ্য সামনে এসে দাঁড়ায়।

মনোবল ভেঙ্গে যায়, মনে হয় আমাদের মেরুদন্ড নেই, পায়ের তলার কেঁচো জাতীয় প্রাণী! অবশ্য তখন আমাদের শান্তনা মফ:স্বলের একজন মোনাজাত উদ্দিন !

বর্তমান সময়ের একটা সাধারণ হিসাব করে দেখুন মফ:স্বলের সাংবাদিকরাই কিন্তু যোগ্যতাবলে বেশীরভাগ সম্প্রচার মাধমে, প্রিন্ট মিডিয়াতে হাল ধরে রেখেছে, বড় বড় পদে সফলতার স্বাক্ষর রাখছে, নয় কি ? আর তোমাদের বড়াই টা কিসের গো, কে তোমাদের আদর্শ, কে তোমাদের অনুসরণীয়, অনুকরণীয় ?

ঢাকার কূলীনদের প্রতি মিনতি, সংবাদে সীমারেখা নয়, বক্রতার ছাপ নয়, মফ:স্বল আর ঢাকা নয়, চাইছি তোমার বন্ধুতা । তোমাদের টা খবর আমাদের টা দিনের ভগ্নাংশ !

হিসাব করে দেখুন, উপরে যেসব প্রসঙ্গ বলেছি, এমন হাজারো বিষয়ে আমাদের দক্ষ হতে হয়, নইলে মফ:স্বলে কাজ করা যায় না, সফলতা পাওয়া যায় না। দেখুন, মাঠের পর মাঠ কৃষকের ধানের গাছ লালটে হয়ে মরে যাচ্ছে, কিন্তু আপনাকে জানতে হবে, কি রোগ, কেন হলো, কি প্রতিকার আছে। এসবের সম্যক ধারনা নিয়ে আপনাকে রিপোর্টের দিকে এগুতে হবে ।

পুকুরের পানিতে মাছ বড় হয় না, গ্রামের পর গ্রাম পুকুরগুলো অকেজো হয়ে আছে মাছ বিনে কিন্তু আপনাকে জানতে হবে, কি সমস্যা পানিতে, কেন এ সমস্যা, সমাধান কি তখন আমাদের হতে হয় মৎস বিশেষজ্ঞ পানি বিশেষজ্ঞ ।

এক সময় প্রচুর গম চাষ হতো, এখন কৃষকেরা আর গম চাষ করছে না কিন্তু কেন, আমাদের জানতে হয় গম চাষের জন্য কেমন মাটি, পানি আবহাওয়া দরকার, শিশির কি পড়ছে আগের মতো, শীত টা হঠাৎ কেন কম হয়ে গেছে, তার মানে আপনাকে জানতে হবে আবহাওয়ার সমষ্টিক ধারণা জলবায়ু কি অবস্থায় আছে, আপনি তখন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ।

গ্রামের বেশ কয়েকটা কিশোরের আচরণ অনেকটাই মেয়েলী, উদ্বিগ্ন অভিভাবক। তখন আপনার ভুমিকা ডাক্তার সংক্রান্ত অধ্যায়ে, আপনাকে জানতে হবে, কেন কিশোরগুলো ক্রমেই এমন হচ্ছে, এর পরে কি হতে পারে, এসব জানতে আপনাকে অবশ্যই হরমোন, বয়োসন্ধি কি, কেন, কেন হয়, না হলে কি হতে পারে অথবা কিছু কিশোরীর মুখে লোমশ লক্ষণ, সদ্য যৌবনে পা দেয়া তরুণের মতো গোফের রেখা, লোক লজ্জায় তাদের বাইরে বের হওয়া দায়! তখন কিন্তু সম্যক ধারণা ছাড়া আপনি কিছুই রিপোর্ট করতে পারবেন না।

মরা নদীতে এবার অকাল বন্যা, আপনাকে জানতে হবে, কেন এই বন্যা, কি কারণ হতে পারে ।

যুগের পর যুগ এক দম্পতির সন্তান হয় না, শ্বশুরালয়ের শারিরিক, মানষিক নির্যাতনে অবশেষে স্ত্রীর আত্মহত্যা। আপনিও কি রিপোর্টে শ্বশুরালয়ের মতো বলতে পারেন সে ছিল বাজো( গ্রাম্য ভাষা), বন্ধ্যা, অপয়া বা আরো অবমাননাকর কিছু, নিশ্চয় না আপনি সচেতন সংবাদকর্মী হলে অবশ্যই জানতে হবে ঐ দম্পতির উভয় কে নিয়ে । জানতে হবে শুক্রানু, ডিম্বানু, বীর্য এসব নিয়ে। দেখা যাচ্ছে স্বামীর বীর্য কোন কারনে কম হয়ে গেলে, প্রজনন সক্ষমতা হারিয়ে ফেললে সে সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কিন্তু স্ত্রী কে দোষারপ বা বন্ধ্যা, অপয়া বলা ঠিক ছিল না, এসব যদি সঠিক ভাবে আপনার ধারনায় না থাকে তবে আপনি সাংবাদিকতায় যোগ্য নন।

গ্রামের পর গ্রাম অজ্ঞাত রোগ আতঙ্ক, দুজন মারাই গেছে বলছে গ্রামবাসী, গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ । আপনাকে জানতে হবে কি সেই অজ্ঞাত রোগ, আদৌ কি ঐ দু'জন অজ্ঞাত রোগে মারা গিয়েছে। নাকি স্রেফ গুজোবেই লঙ্কাকান্ড এলাকাটিতে। সঠিক রিপোর্ট করতে হলে আপনাকে ঐ দু'জনের মৃত্যুর পূর্বাপর জানতে হবে, ঘটনার আরো গভীরে যেতে হবে, নইলে আপনি গ্রামবাসী বা আমজনতার কাতার থেকে পৃথক কেউ না, সাংবাদিক তো দূরের কথা। 

ফার্মের পর ফার্ম মুরগী মারা যাচ্ছে, সবাই বলছে গরমে স্ট্রোক করে মরছে, আপনিও কি তাই বলবেন, না। আপনাকে জানতে হবে সেখানকার পরিবেশ, আবহাওয়া, তাদের বাসস্থান, খাদ্য, ঔষধ প্রয়োগ ইত্যাদি প্রসঙ্গে, তাই না ? দেখুন ঠেলা কত্ত কি আপনাকে জানতে হবে ।

একটা পুকুরে হঠাৰ বেশীর ভাগ মাছ মরে ভেসে উঠল, তার কিছুক্ষণ আগেই পুকুরে পানির স্বচ্ছতা বা পরিচ্ছন্ন রাখতে ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। আপনি কি তখন লিখে দিবেন ঔষধ প্রয়োগে মারা গেল মাছ ? সেই ঔষধ কোম্পানী বা ঔষধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান কে পুকুর মালিকের মতো উদ্ধার করবেন ? যদি তাই করেন তবে আপনি মফ:স্বলের অযোগ্য সাংবাদিক। এক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে ঐ ঔষধ আরো কেউ ব্যবহার করছে কি না, আশপাশে কোন পুকুরে দেয়া আছে কি না, দেয়া হলে সেখানকার কি অবস্থা, সেখানেও কি মারা গেছে সব মাছ ? হ্যা, যদি মারা যায় তখন আপনি ঔষধের গুণাগুণ নিয়ে সামান্য খটকা রাখতে পারেন, তবু পুরো খটকা নয়, এভাবে এগুতে হবে । আর যদি দেখেন সেই ঔষধে অন্য কোন পুকুরের মাছ মরেনি তখন কিন্তু সেই ঔষধ কোম্পানী নিয়ে আপনি সুনাম হানিকর কোন সংবাদ পরিবেশন করতে পারবেন না। তখন আপনার মনোযোগ দিতে হবে, তাহলে কেন মারা গেল সেই প্রথম পুকুরের মাছ, কোন বিষক্রিয়া, পানি নষ্ট, মাছের মোড়ক ইত্যাদি আপনার জানতে হবে, বুঝতে হবে, তবেই আপনি সচেতন সংবাদকর্মী।

রাস্তাটিতে শুধু দুর্ঘটনা ঘটে, মানুষ মারা যায়। সব দোষ ড্রাইভারের বলে চালিয়ে দিবেন ? না, আপনাকে ড্রাইভারের দোষ-গুণ খোঁজার পাশাপাশি, সেই রাস্তার আকার আয়তন, ধারণ ক্ষমতা, বাক, আবহাওয়ার অবস্থা, কুয়াশা, ঝড়-বৃষ্টি, প্রকৃতির গতিবিধি এসব নিয়েও ধারণা থাকতে হবে, কারণ খুঁজতে হবে, তার মানে কতটা সুক্ষ ধারণা আপনাকে অর্জন করতে হয় ।

সবাই বলছে খুণীরা এপথ দিয়েই গেছে হয়তো, খুণের সময় যতটুকু বোঝা গেছে ওরা ছিল দেখতে স্বাস্থ্যবান, লম্বা-চওড়া। আপনিও কি সবার সেই কথায় বিশ্বাস করবেন, ঐপথ দিয়েই গেছে ? আপনি দেখছেন পাবলিক যে পথের কথা বলছে, সেখানে কিছু পায়ের ছাপ আছে যা বেটে বামন আকৃতির আর বিপরীত একটা পথের কাঁদা পানিতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে লম্বা লম্বা পা ফেলে গিয়েছে কিছু লোক, ছাপও চওড়া, আরো কিছু আলামত বিপরীত রাস্তায় আপনি খেয়াল করছেন। তার মানে আপনাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞের মতো কাজ করতে হবে। কিশোরীটি আত্মতহ্যা করেছে বলে একটি পক্ষ আপনাকে বলছে, আপনি কি তাই লিখতে পারেন ? আত্মহত্যার প্রাথমিক আলামতগুলো কেমন হতে পারে তা আপনাকে জানতে হবে, ডাক্তার না হয়েও ।

লোনা পানি বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা পেরিয়ে এখন যশোরে, কি আর করার প্রকৃতির উপর তো কারো হাত নেই এমন ভাবলে কি আপনার ধারণা সঠিক হলো ? কিছুদিন আগেও তো যশোরের পানি লোনা ছিল না, তবে কেন এমন হলো, সেই কারণ খুঁজতে হবে, তা খুঁজতে গেলে সামনে আসবে জলবায়ু, প্রকৃতির উপর মানুষ্য সৃষ্টি জুলুম, তার মানে প্রকৃতি, জলবায়ু, আবহাওয়া, বাতাস, পানি সব বিষয়ে আপনাকে পড়তে হবে, সেই জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

কেন বজ্রপাতে এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে ? আগে তো এত মানুষ মারা যায়নি, তার কারণ, অর্থ খুঁজতে হলে জানতে হবে বজ্রপাত কি, কেন এসবের পূর্বাপর ।

আগে এক টাকায় ১সের চাল কিনেছেন, এখন সেই চাল ৫০ টাকাতেও মিলছে না, কেন ? জানতে হলে টাকার মান, ক্রয় ক্ষমতা, সক্ষমতা, উৎপাদন, বিপনন, আমদানী-রপ্তানী, শুল্ক অনেক অনেক বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে।

হঠাৎ করেই দেখছেন একটা লোক অবস্থান করছে গ্রামে, সুন্দর আচরণ, কথাবার্তা, কাজ-কর্ম করেই খায়-দায়, গ্রামটিতে দিনযাপন শুরু করেছে। এলাকার মানুষ তার মাথার পরচুলাকেও প্রশংসা করে। আপনিও এমনটি করবেন কিন্তু একটু গোয়েন্দাগিরি মনোভাব তার পেছনে লাগাতে হবে, হয়তো পেয়ে গেলেন, ঠান্ডা মাথার এক খুণী সে। তার নিজ এলাকায় খুণো-খুণীর কিছু বড় অপরাধ ঘটিয়ে আত্মগোপন করেছে এলাকাটিতে, মাথা টাক হলেও তা ছদ্মবেশ ধারণে নিয়েছে পরচুলা। তার মানে আপনাকে গোয়েন্দাগিরি, অনুসন্ধানী মনও থাকতে হবে, জানতে হবে মনোবিজ্ঞান।

সবাই বলছে শিল্পী টি ভাল গান করছে, কিন্তু তাকে প্রতিযোগীতায় তৃতীয় বানানো হলো, এটা কেমন কথা ? আসলে গানের ভাল মন্দ কি তা জানতে আপনাকে সুর, তাল, লয়, শব্দ, ধ্বনি, উচ্চারণ, অর্থ, প্রকাশভঙ্গি সব কিছুই জানতে হবে, তারপর আপনি বলতে পারবেন, আসলেই কি পক্ষপাত করা হয়েছিল ঐ প্রতিযোগী কে নিয়ে না যথেষ্ট গ্রামার সমৃদ্ধ ছিল না তার গান। একটি শিল্পীর গুণ-বিচারের ক্ষমতাও আপনাকে থাকতে হবে।

আপনি যে সর্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মানেই আপনার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত তা কিন্তু নয় স্ব স্ব বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই স্মরণাপন্ন হতে হবে বিশেষজ্ঞ, এক্সপার্টদের কাছে, তবেই পূর্ণতা পাবে, যৌক্তিক হিসাবে বিবেচিত হবে আপনার প্রতিবেদন, রিপোর্ট বা সংবাদটি।

আরো সহজ করে বললে আপনাকে কি জানতে হবে, হবে না, কেন জানা দরকার, কেন আপনাকে প্রয়োজনে ডাক্তার, কবিরাজ, শিল্পী-কবি সবই বুঝতে হয় হবে তার আরো সহজ পাঠ হলো আপনাকে এবিসি জ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে সকল বিষয়ে। নইলে জেলা-উপজেলা বা মফ:স্বলের সাংবাদিক হিসাবে যোগ্য বিবেচিত হবেন না। মফ:স্বলে একাডেমিক/ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী, এমএ পাশ বা জার্নালিজম বা আরো সার্টিফিকেট ক্ষেত্র বিশেষ অচল, যদি না আপনার ঐ এবিসি জ্ঞান না থাকে । একটি নূন্যতম ডিগ্রী আর এবিসি জ্ঞানের বিকল্প নেই মফ:স্বল সাংবাদিকতায়।

ক্ষেত্র বিশেষ অভিজ্ঞতা আর এবিসি জ্ঞানের পরিধি আরো ক্ষুরধার হলে একাডেমিক ডিগ্রীটিও গৌণ হয়ে যায়। দেশে এমন অনেকেই আছেন যাদের রিপোর্টের কারণে সমৃদ্ধ, প্রশংসিত তার প্রতিষ্ঠান বা সেই গণমাধ্যম। এভাবে বলতে থাকলে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ফুরাবে কিন্তু মফ:স্বল সাংবাদিকদের কত কিছু জেনে বুঝে সাংবাদিকতা করতে হয় তার শেষ হবে না। ঢাকার সাংবাদিকদের কিন্তু সেক্টর আলাদা, কেউ অপরাধ, কেউ রাজনীতি, কেউ ব্যবসা-বানিজ্য, অর্থনীতি কেউ আবার পরিবেশ বিষয়ক এরকম ভাগ থাকে। কেউ অন্য কোন বিষয়ের ছোয়াও মাড়ায় না সাধারণত। এ্যাসাইনমেন্ট শেষ তো সেদিনের কাজ শেষ ।

অন্যদিকে এমন সব বিষয়ের উপাদান রাজধানীর বাইরে বিরাজমান হলেও আপনাকে একাই সব সামলাতে হয়, হচ্ছে, হবে। হয়তো রাজধানীতে চাপ টা একটু বেশী কিন্তু এসব নিউজ উপাদান তো মফ:স্বলেও আছে। যা নিয়ে রিপোর্ট করতে হয় ঐ একের ভেতর ৫গুণের অধিকারী মফ:স্বল সাংবাদিক কে ।

একটা প্রসঙ্গ বলা হয়নি মফ:স্বলের এমন সাংবাদিকতা বা সাধনার বিপরীত চিত্রও আছে ভুরি ভুরি। গলায়, মাজায় ক্যামেরা আর কার্ড ঝুলিয়ে স্রেফ চাঁদাবাজি করা, তারাও মফ:স্বল সাংবাদিক! তবে যেহেতু এমন কলঙ্কযুক্ত অধ্যায় প্রকৃত মফ:স্বল সাংবাদিকতার রীতিনীতিতে পড়ে না, তাই কোন কথাও বলতে চাই না।

আমরা বিশ্বাস করতে চাই সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যায়নি, যেতে পারে না !

শেষ কথা হলো, বিশ্ব টা যখন গ্লোবাল ভিলেজ তখন ছোট্ট দেশে মফ:স্বলের 'ওরা' আর ঢাকার 'কূলীন সাংবাদিকরা' এমনটি প্রত্যাশিত নয়।

খবরে জেলা, বিভাগ, গ্রামাঞ্চল কে দিনের ভগ্নাংশে আটকানো যেন না হয়। খবরই জুড়ে থাক খবরের জায়গা।

কিছু চ্যানেল, পত্রিকা অবশ্য মফ:স্বলের ঘটনায় দিনের প্রধান খবর হিসাবে নিতে শুরু করেছে গুরুত্ব অনুয়ায়ী, বেতন-কড়িও মফ:স্বলে ভাল দেয়। আমরা আশা করি এই ধারা, গতি ছড়িয়ে পড়ুক গণমাধ্যমজুড়ে ।

 

লেখক- আব্দুর রহমান মিল্টন, ডিবিসি নিউজ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি