বিশ্ব গণমাধ্যমে তালেবানের পুনরুত্থান


বিশ্ব গণমাধ্যমে তালেবানের পুনরুত্থান

ছবি : এএফপি

প্রায় দীর্ঘ দুই দশক পর আবারো পুরো আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফিরেছে তালেবান। তাদের কাছে পতনের পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশাসনিক দপ্তর, স্থাপনার দায়িত্ব নিজেদের কাছে নিয়েও নিয়েছে তারা। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।

ছবি : সংগৃহীত

এদিকে, দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্ব দরবারে অনেক কিছুই এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। ২০০১ সালে তালেবান শাসনের অবসান হওয়ার পর আফগানিস্তানের গণমাধ্যমের সমৃদ্ধি হয়েছে। তবে তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পর বেশীরভাগ স্থানীয় রেডিও স্টেশন, সংবাদপত্র এবং সম্প্রচারকারীদের জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তালেবানদের প্রতিশোধের ভয়ে অনেক সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক সাংবাদিকই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব গণমাধ্যমগুলোতে আসা উল্লেখযোগ্য সংবাদ ও মতামত বিজেসি নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।

আলজাজিরার খবরে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইসের ব্রিফিংয়ের তথ্য জানানো হয়। সেখানে তারা বলেন, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি পেতে হলে মানতে হবে শর্ত। খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানায়। যে সরকার নারীদের অধিকার রক্ষাসহ মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবে। এর পাশাপাশি তালেবানের আচরণের ওপর নির্ভর করবে ওয়াশিংটন কাবুলের নতুন প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেবে কিনা।

ছবি : সংগৃহীত

এদিকে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানান, দেশের সাধারন জনগণ বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে তালেবানদের, এছাড়াও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় না দিলে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

পাকিস্তানের প্রধান দৈনিক ডন জানিয়েছে, কাবুলের প্রধান মোড়গুলোতে তালেবান যোদ্ধারা অবস্থান নেন। তবে সাধারন লোকজন ঘরের মধ্যেই ছিল। স্বাভাবিকের তুলনায় সড়কে গাড়ি কম ছিলো এবং তালেবান যোদ্ধারা সাধারণ মানুষের গাড়িতে তল্লাশি করছে। এরমধ্যেই বিভিন্ন বাড়িতে লুটতরাজের খবর আসে।

ছবি : সংগৃহীত

কাবুলের মিডিয়া কোম্পানি মোবি গ্রুপের পরিচালক সাদ মোহসেনি টুইটারে টুইট করে জানিয়েছেন, তালেবান যোদ্ধারা তাঁর কোম্পানিতে এসে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে থাকা অস্ত্র সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। এসময় তালেবান একজন মুখপাত্র জানান, তাঁদের যোদ্ধারা বেসামরিক নাগরিকদের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে নিচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক নিউজ এজেন্সি এস্যোসিয়েট প্রেসে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে তাদের টপ নিউজ। সেখানে বেশীরভাগ সংবাদ হচ্ছে আফগানিস্তান নিয়ে। তাদের সংবাদে তারা জানায়, কেনো আফগানিস্তানে এখন তালেবানরা ক্ষমতা নিলো, এরপরেই বা কী হবে আফগানিস্তানের ভাগ্যে, আর কেনই বা আফগান সিকিউরিটি ফোর্স এভাবে ভেঙ্গে পড়লো।

ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন- বিবিসি’র সাংবাদিক ফ্রাংক গার্ডনার তার প্রতিবেদনে বলেন, তালেবান ক্ষমতায় আসায় আফগানিস্তান কি সন্ত্রাসীদের স্বর্গ হতে যাচ্ছে নাকি? এরকম হেডলাইনে প্রতিবেদন করেছেন তিনি। প্রতিবেদনে প্রায় দুই দশক পরে তালেবানের ক্ষমতায় আসা নিয়ে বিস্তারিত লেখেন এই সিনিয়র সাংবাদিক। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ওসামা বিন লাদেনের হামলা নিয়ে কথা বলেন তিনি।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক অন্যান্য গণমাধ্যমও গুরুত্বের সাথেই প্রচার করছে আফগানিস্তানের সংবাদ।