ইউনিলিভারের বিজ্ঞাপন বন্ধে অ্যাটকোর প্রতিবাদ


ইউনিলিভারের বিজ্ঞাপন বন্ধে অ্যাটকোর প্রতিবাদ

ছবি : সংগৃহীত

 

বাংলাদেশে ইউনিলিভার হঠাৎ করে একতরফাভাবে টিভি চ্যানেল এবং মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়ায় গভীর উদ্বেগ এবং তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের মালিকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স’-অ্যাটকো।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অ্যাটকো জানিয়েছে, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে এবং করোনা সংকট উত্তরণের ফলে যখন দেশে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। দেশের অর্থনীতি আবার সক্রিয় হচ্ছে, সে সময় করোনা সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত টেলিভিশন শিল্পকে সহযোগিতার জন্য অ্যাটকো বিজ্ঞাপন রেট ৩০% বৃদ্ধির দাবি জানায়। কিন্তু তা উপেক্ষা করে ইউনিলিভারের বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য। ইউনিলিভারের এই সিদ্ধান্ত দেশের টিভি চ্যানেলের এবং মিডিয়ার আর্থিক সংকট সৃষ্টি করবে।

সংগঠনের সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আশা করা হয়, দেশের টিভি চ্যানেলে এবং মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে ইউনিলিভারের পণ্যের বিপণন ও ব্যবসায়িক প্রসার হচ্ছে, তাই দ্রুত ইউনিলিভার বিজ্ঞাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে।

টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন রেট ৩০% বৃদ্ধি করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ইউনিলিভারকে অ্যাটকোর পক্ষ থেকে আবারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এর আগে ৮ নভেম্বর, সোমবার রাজধানীর বনানীতে এসএফবিএল টাওয়ারে নবনির্বাচিত কার্যকরী কমিটির বৈঠকে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বিদ্যমান বিজ্ঞাপনের মূল্য থেকে শতকরা ৩০ ভাগ দর বাড়ানোর ঘোষণা দেয় অ্যাটকো। ওইদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান অ্যাটকো সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী।

অ্যাটকো সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী বিজ্ঞাপনের দর নিয়ে মালিকদের আশঙ্কার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা শুনেছি বিজ্ঞাপনদাতারা ২০-৩০ ভাগ দর কমাবেন। এ ধরণের আঘাত এলে চ্যানেল টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এটা হবে আমাদের জন্য একটি খারাপ সংবাদ। করোনার কারণে গত দেড় বছর দুরাবস্থার মধ্যে কাটিয়েছে টেলিভিশন শিল্প। এ সংকট এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমরা। এরপর যখন সংবাদ আসে বিজ্ঞাপনের দর কমিয়ে দেয়া হবে, সেটা এ শিল্পের জন্য অশনিসংকেত’।

অঞ্জন চৌধুরী আরো বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই আমরা মেনে নেব না। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আজকের সভা থেকে বিদ্যমান বিজ্ঞাপন দর থেকে ৩০ ভাগ বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন। আমরা আশা করছি বিজ্ঞাপনদাতারা ৩০ ভাগ দর বৃদ্ধির বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনায় নেবেন’।

অ্যাটকো সিনিয়র সহ সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি যখন সচল হচ্ছে, তখন বিজ্ঞাপনের হার কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে টেলিভিশন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা তাদের কাছে অনুরোধ করব অন্তত ৩০ শতাংশ বিজ্ঞাপনের দর বাড়াবেন বিজ্ঞাপনদাতারা। করোনাকালে আমরা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তা যেন কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারি। সংকট সৃষ্টি না করে নতুন করে একে-অন্যের সহযোগী হিসেবে অবদান রাখতে পারি’।

অ্যাটকো নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. রুবানা হক বলেন, ‘করোনাকালের বিগত দুই বছর অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। এখন সবার বাঁচা-মরার প্রশ্ন। আমাদের বিপদে ফেলে কারও লাভ হবে না। সবাইকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩০ ভাগ হারে দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে’।