পাবজি, ফ্রি ফায়ার বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ, টিকটক, লাইকি নিয়ে রুল


পাবজি, ফ্রি ফায়ার বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ, টিকটক, লাইকি নিয়ে রুল

 

আগামী তিন মাস পাবজি ও ফ্রি ফায়ারসহ বিপজ্জনক সব অনলাইন গেম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

১৬ আগস্ট সোমবার একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পাশাপাশি টিকটক, লাইকি ও বিগোসহ এ ধরণের অন্যান্য অ্যাপস কেন বন্ধ করা হবে না তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে রুল দিয়েছে আদালত।

এছাড়াও নিয়মিতভাবে এসব অনলাইন গেইম এবং স্ট্রিমিং অ্যাপ পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন এবং এ বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার গত ২৪ জুন সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার, লাইকির মতো সব ধরণের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করেন।

উক্ত রিটে বিবাদী করা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশের আইজিকে।

রিট দায়েরের আগে গত ১৯ জুন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ বিপজ্জনক সব ধরণের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

এসব গেম ও অ্যাপসে বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোরদের ব্যাপক আসক্তির কথা উল্লেখ করে সেই নোটিশে বলা হয়, টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, এবং ফ্রি ফায়ারের মতো গেমগুলোতে বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন। এসব গেমস যেন যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণের এক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।

অন্যদিকে, টিকটক, লাইকি অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে দেশের শিশু কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে এবং সারাদেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি নারী পাচার এবং বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনাও ঘটেছে। যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশের জনস্বার্থ, শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের পরিপন্থি।

ক্ষতিকারক অ্যাপসগুলোকে অবিলম্বে অপসারণ করা এবং সব লিংক বন্ধ করার অনুরোধ করে নোটিশে আরও বলা হয়, শিশুদের জন্য উপযোগী এবং যথাযথ অনলাইন গেমগুলোকে সুপারভাইজ করার জন্য একটি মনিটরিং টিম গঠন করা অত্যন্ত জরুরি। তাই সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেমস এবং টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মতো গেম ও অ্যাপস গুলো যেন অপসারণ করা হয়।

আইনজীবীরা জানান, নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

এধরণের গেম বা অ্যাপ বন্ধের ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বাংলাদেশেও পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল, পরে আবার চালু করা হয়।

সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।