তালেবানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাংবাদিক


তালেবানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাংবাদিক

 

আফগানিস্তানে তালেবানের হাত থেকে বাঁচতে এক নারী সাংবাদিক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে এ কথা জানান ওই নারী সাংবাদিক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২২ বছর বয়সী এই সাংবাদিক জানান, গত সপ্তাহে তালেবান যোদ্ধারা তাকে খুঁজতে তার বাড়িতে যায়। বিষয়টি টের পাওয়ার পরপরই ঐ তরুণী বোরকা পরে পালিয়ে যান। তালেবানের ভয়ে নিজের নাম এবং শহরের নামও জানাননি তিনি।

ঐ সাংবাদিক জানান, ‘আমার পালিয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু আমাদের পুরো প্রদেশ তালেবান দখল করে নেয়। শুধু বিমানবন্দরই সরকারি বাহিনীর দখলে আছে। যেহেতু আমার বয়স ২২ বছর আর তালেবান তরুণীদের জোর করে তাদের যোদ্ধাদের সাথে বিয়ে দিচ্ছে তাই আমি এমনিতেও সেখানে নিরাপদ ছিলাম না। তাছাড়া আমি একজন নবীন সাংবাদিক। তালেবান আমার সব সহকর্মীদেরও খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাই আমি পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই’।

প্রথমে তিনি তার এক আত্বীয়ের সাথে তাদের গ্রামে পালিয়ে যান। পরে তিনি গোপন খবরে জানতে পারেন, তালেবান তাদের ঐ গ্রামে পালানোর খবর টের পেয়ে গেছে এবং সেখানে এসে তাদের প্রত্যেকের শিরোচ্ছেদ করার পরিকল্পনা করছে। এরপর সাংবাদিক ও তার ঐ আত্বীয় আবার সেখান থেকে আরও দূরে পালিয়ে যান। টেলিফোনের লাইনগুলো সব ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়াতে ঐ তরুণীর সাথে তার বাবা-মার কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ‘আমি ভীষণ আতঙ্কিত। জানি না আমার সামনে কী অপেক্ষা করছে। আমি কী আর বাড়ি ফিরতে পারব? আমি কী আমার বাবা-মাকে আবার দেখতে পারব? আমি কোথায় যাবো? কীভাবে বাঁচবো?’ এদিকে, কয়েকদিন আগেই বোরকা না পরায় আফগানিস্তানে এক তরুণীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তালেবানের বিরুদ্ধে।

এর আগে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর এক বিজ্ঞপ্তিতে পুরুষদেরও লম্বা দাড়ি রাখতেই হবে বলে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে তাকহার প্রদেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালেবান। নারীরা বাড়ি থেকে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া একা বের হতে পারবেন না এমন কথাও ছিলো বিজ্ঞপ্তিতে। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা মোতায়েন হওয়ার আগে এসব আইন জারি করেছিল তালেবান। তখন দেশটিতে নারীদের চাকরি তো দূরের কথা, কোনো পুরুষ আত্মীয় ছাড়া বাইরে বের হওয়াও নিষেধ ছিল। এমনকি এই নিয়ম না মানলে কঠোর শাস্তিও ভোগ করতে হতো।