এ যেন অন্যরকম ঈদ !!!


এ যেন অন্যরকম ঈদ !!!

আনন্দ-খুশির বার্তা নিয়ে আসে ঈদ। করোনায় এবারের ঈদ আনন্দ উযযাপনে এসেছে সাবধানতা। কোলাকুলি, ঈদ জামাত ও আনুষ্ঠানিকতাকে ঘিরে এসেছে নির্দেশনা।

করোনা আতংক ও ঈদ আনন্দে সবাই নিজ পরিবারের সাথে থাকলেও গণমাধ্যমকর্মীরা ব্যস্ত পেশাদারিত্বে। ভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের ঈদ উদযাপনের সংবাদ পাঠক ও দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতেই ব্যস্ত তারা। আর এই দায়িত্বেই যেন আনন্দ,এই দায়িত্বেই যেন স্বস্তি।

ঝুকি মাথায় নিয়েই সংবাদ প্রকাশ-প্রচারে সরগরম গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো। স্বজনদের ছাড়া ঈদ উদযাপনে সংবাদকর্মীদের খারাপ লাগা থাকলেও পেশাদারিত্বের বেড়াজেলে সব বদলে যায়।

তবে করোনায় এবারের ঈদের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। স্বজনদের সাথে ঈদ উযযাপন তো হচ্ছেই না উল্টো সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

বিজেসি নিউজের সাথে বদলে যাওয়া ঈদ উদযাপন ও পেশাদারিত্ব নিয়ে কথা বলেছেন যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশু। বলছিলেন, পরিস্থিতির কারনে এবার সংবাদ সংগ্রহই বেশ ঝুকিপূর্ণ। এর মধ্যেও সাংবাদিকরা কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।

মাহফুজ মিশু বলেন, পেশাগত কারনেই যে কোন একটা ঈদে ছুটি পান সাংবাদিকরা। ছুটি পাওয়া ঈদে স্বজনদের সাথে দেখা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা হয়, হয় স্মৃতি রোমন্থন ও খেলাধুলা। কিন্তু করোনায়  এবার তা কিছুই সম্ভব হচ্ছেনা।

এছাড়া, পেশাগত দায়িত্ব পালনেও এসেছে ভিন্নতা। ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায়ের সংবাদ সংগ্রহ, অফিসে ঈদ সেলামী সংস্কৃতি, অফিসে্র মুখরোচক খাবার কিংবা একে অন্যের বাসার খাবার ভাগাভাগি করার আয়োজনও করা যাচ্ছেনা এবার।

করোনা সময় যেন সব স্বাভাবিকতা, সব উচ্ছাস কেড়ে নিয়েছে। বরং এখন ঝুঁকি মাথায় নিয়েই হাসপাতাল, করোনা রোগিদের অবস্থা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হালচাল নিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করতে হচ্ছে।

একই প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন আবদুল্লাহ তুহিন। পেশাগত ভাবেই অনেক দূর্যোগের সংবাদ সংগ্রহ করেছেন তিনি। কিন্তু এমন অতিমারি, এমন দূর্যোগে বিপর্যস্ত অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি কখনো। এ যেন এক কঠিন বাস্তবতা। এখন আনন্দ ভাগাভাগির চেয়ে সচেতনতা ভাগাভাগি করতেই যেন সচেষ্ট সবাই।

করোনার আগে গ্রামে ঈদ উদযাপন দারুণভাবে মিস করছেন তিনি। এছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সাথে মিশে ঈদ উদযাপনেও ছিলো ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এখন সকল আনন্দই ভার্চুয়াল ফ্রেমে। ঈদ আসলেও কোন আনুষ্ঠানিকতা স্বস্তির নয় তার কাছে।

করোনা পরিস্থিতিতে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন নাগরিক টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক শাহনাজ শারমিন। তার মতে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সকল পরিকল্পনা বিফলে গেছে। করোনা পরিস্থিতির সংবাদ সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত ছিলো সাংবাদিকরা। এর মধ্যে ঈদ এলেও সেটি মন খারাপের। শাহনাজ শারমিন বলছিলেন,পরিবারের সদস্যদের কথাও; পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যাদের বঞ্চিত করেছেন তাদের। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে শীগ্রই স্বাভাবিক হবে পৃথিবী বলেও মনে করেন তিনি।

দুই ঈদের একটা স্বজনদের সাথে অন্যটা সহকর্মীদের সাথে কাটাতে শেষ ১২ বছর ধরেই অভ্যস্ত চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সিনিয়র প্রেজেন্টার, ফারাবি হাফিজ। বলছিলেন, বর্তমান সময়ের বাস্তবতা আনন্দ উদযাপনের ধরনই বদলে দিয়েছে। স্বজন-সহকর্মীদের সাথে ঈদ উদযাপনের ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে সাবধান ও সচেতনতার অবয়ব দিয়েছে অস্বাভাবিক উদযাপন।

করোনা সমরে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করে যাওয়া সকল গণমাধ্যমকর্মীর এমন ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা রয়েছে। ঝুঁকি মাথায় নিয়েই করোনা ভয়াবহতার সংবাদ পৌছে দিচ্ছেন সাধারনকে ভালো রাখতে। তবুও প্রত্যাশা ভালো হয়ে উঠুক পৃথীবি, ভালো থাকুক মানুষ।