গড়ে প্রতিদিন ১০ জন সাংবাদিক আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়


গড়ে প্রতিদিন ১০ জন সাংবাদিক আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়

বেড়েছে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে বলা এই প্রকোপে দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সামনের সারির যোদ্ধা হিসেবে সেই সংবাদ সংগ্রহেই ব্যস্ত দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা। সঠিক আর সবশেষ তথ্যটুকু মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই ব্যস্ততা।

কিন্তু সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক গণমাধ্যমকর্মীই আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। সাম্প্রতিক সময়ে গড়ে প্রতিদিন ১০ জন সাংবাদিক করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন।

করোনা শুরুর পর থেকে ২০২০ সালের ৩ এপ্রিলে প্রথম কোন গণমাধ্যমকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সবশেষ ৮ এপ্রিল পর্যন্ত সেই সংখ্যা ১ হাজার ২শ ৫৪ জন। এরমধ্যে আক্রান্ত হয়ে মৃতুবরণ করেছেন ৩২ জন সাংবাদিক যাদের মধ্যে ১৩ জনের শরীরে মিলেছে করোনা উপসর্গ। এছাড়া এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১হাজার ১শ ২০ জন সাংবাদিক। এই তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম সক্রিয় গ্রুপ “আওয়ার মিডিয়া, আওয়ার রাইটস”র

তথ্য অনুযায়ী আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের সংখ্যা ৯শ ৩০ জন। এছাড়া ঢাকার বাহিরে ৩শ ২৪ জন আক্রান্ত। ২শ১০টি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এর মধ্যে ১শ ২৭টি পত্রিকা, ৩২টি টেলিভিশন, ৪৪টি অনলাইন পোর্টাল, ৫ টি রেডিও ও ২ টি নিউজ এজেন্সির সাংবাদিকরা আক্রান্ত হয়েছেন।

বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও বর্তমানে প্রায় অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সম্প্রতি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা “দৈনিক যুগান্তর”এ একসাথে ২০ জনের অধিকের শরীরে মিলেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। সতর্কতায় ঢাকায় কর্মরত সব কর্মীর করোনা পরীক্ষা করিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সতর্কতা ও নিরাপত্তার জন্যই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র একজন সাংবাদিক। যার শনাক্ত হয়েছেন তাদের বাসায় আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সাংবাদিক জানিয়েছেন তাদের শারিরীক দুর্বলতার কথা। নিজ বাসাতেই চিকিৎসা নিলেও খুব খারাপ সময় অতিবাহিত করছেন বলেও জানান তারা।

এদিকে করোনার দ্বিতীয় ধাপের সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। সতকর্তার জন্য সাংবাদিকদের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেস ক্লাব এক সপ্তাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রেসক্লাব চত্বরে সপ্তাহে তিনদিন (শনি, সোম ও বুধ) করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের জন্য ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সপ্তাহে দুইদিন করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। গত শনিবার ডিআরইউতে ৫৭ জন (সদস্য ও তাদের পরিবার) করোনার নমুনা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২৮ জনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।

এদিকে সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্টস জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে মহাখালী কমিউনিটি সেন্টারে সপ্তাহে দু’দিন, বুধ ও শনিবার করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। আগ্রহীরা নিম্নের লিংকে গিয়ে নিবন্ধন করে করোনা পরীক্ষা করাতে পারবেন-  

https://docs.google.com/forms/d/e/1FAIpQLSedhjpBMo85LVF1sbRjzLnD7-TSJRtSwuQKOwIp8rERQfnYLA/viewform?usp=sf_link

এছাড়া বিজেসির পক্ষ থেকে সাংবাদিকরা ফ্রন্টলাইনারদের জন্য আইসিইউ ও হাসপাতালে কয়েকটি বেড সংরক্ষিত রাখার কথাও ভাবছে। 

এদিকে করোনা ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ নেয়া শুরু করেছেন অনেক সাংবাদিক।