সাংবাদিক নির্যাতন : কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি


সাংবাদিক নির্যাতন : কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি

ছবি : সংগৃহীত

 

সাংবাদিক ‘নির্যাতনের’ ঘটনায় শাস্তি পাওয়া কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। গত ২৩ নভেম্বর, মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে এনে সাজা দেয়ার ঘটনায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছর বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করে লঘুদণ্ড দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই শাস্তি বাতিল করে অভিযোগের দায় থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

গত ১০ আগস্টে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শাস্তির আদেশ দেয়া হয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি হয় মঙ্গলবার।

গত বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাদক মামলায় সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে জামিনে মুক্ত হোন তিনি। এরপর নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন আরিফুল ইসলাম।

আরিফুলের অভিযোগ, জেলা প্রশাসকের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন লেখার কারণেই জেলা প্রশাসনের আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার) নাজিম উদ্দিন বাড়িতে ঢুকে তাকে পেটান। এনকাউন্টারে দেয়ারও হুমকি দেন।

ওই সময় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘মাদকবিরোধী অভিযানে’ আরিফুলের কাছ থেকে আধা বোতল মদ ও ১৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ১৮ মার্চ এ ঘটনায় সুলতানা পারভীনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তিনি ২৫ জুন এর লিখিত জবাব দেন। একই বছরের ৯ আগস্ট তার ব্যক্তিগত শুনানি হয়। তার লিখিত বক্তব্য ও মৌখিক জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বিভাগীয় মামলাটি তদন্তের জন্য তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়। তদন্ত বোর্ডের আহ্বায়ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আলী কদর গত ২ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে তিনি সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে বলে জানান। বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সুলতানা পারভীনকে গুরুদণ্ড দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে গত ৮ জুন দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব, অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রশাসনিক দিক বিবেচনা করে তাকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার লঘুদণ্ড দেয়া হয়।

এছাড়া, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) নাজিম উদ্দিন এবং দুই সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার ভিত্তিতে শাস্তি দেয়া হয়।