‘সেট টপ বক্স’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত ১ মাসের জন্য স্থগিত


‘সেট টপ বক্স’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত ১ মাসের জন্য স্থগিত

 

৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের ক্যাবল টিভির সেট টপ বক্স লাগানোর সরকারি সিদ্ধান্ত এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

২২ নভেম্বর, সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

এদিন রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাশফিকুল হুদা। রিট আবেদনটি করেন রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার বাসিন্দা মো. সাহেদ কাওসার।

গত ৪ নভেম্বর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে এক গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে টিভি ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আসবে। স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখা অব্যাহত রাখতে ডিশ ক্যাবল গ্রাহকদের এই সময়ের মধ্যে ক্যাবল বা ফিড অপারেটরের সহযোগিতায় অ্যানালগ পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল সেট টপ বক্স স্থাপনের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায় ৩০ নভেম্বরের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখা যাবে না।

এর আগে গত ২৭ অক্টোবর তথ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপায়নের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত রয়েছে। ফলে এই সময়ের মধ্যে এই দুই শহরের গ্রাহককে ‘সেট টপ বক্স’ নিতে হবে। তা না হলে ক্যাবল টেলিভিশন দেখার ক্ষেত্রে ব্যত্যয় হবে।

সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) এবং ক্যাবল ডিস্ট্রিবিউটর ও অপারেটরদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দেশে টিভি ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল হলে টেলিভিশনের দর্শক, মালিক, ক্যাবল অপারেটরসহ সবাই উপকৃত হবেন। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এবং গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ সব পুরনো বড় জেলা শহরে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে টিভি ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপায়ন হবে। এজন্য গ্রাহকদের সেপটপ বক্স দেওয়ার ব্যবস্থা করবে ক্যাবল অপারেটররা। কিস্তিতে আদায় করা হবে এ বক্সের দাম।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটির দাম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা বা তার বেশিও হয় অনেক সময়। ক্যাবল অপারেটররা সেগুলো সরবরাহ করবে। সেটি ১২ কিংবা ৩০ কিস্তিতে তারা টাকা নেবেন। কীভাবে নেবেন, সেটি গ্রাহকের সঙ্গে তাদের বিষয়। সেটা সরকার ঠিক করে দেবে না।

ডিজিটাইলজেশন নিশ্চিত হলে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী।

তবে, বেঁধে দেয়া সময় পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে ডিজিটাল সেট টপ বক্স সংযোগ বাস্তবায়নের জন্য আরও সময় প্রয়োজন বলে জানায় ফিড অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ফোয়াব)।

১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করে, এমন বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় সরকার। এর দুই সপ্তাহ পর ১৪ অক্টোবর ক্লিনফিড চ্যানেল হিসেবে প্রথম সম্প্রচারে আসে জি বাংলা। এরপর ১৬ অক্টোবর বিজ্ঞাপন ছাড়াই বাংলাদেশে সম্প্রচারে ফিরে স্টার জলসা।

বাংলাদেশে ২০০৬ সালের ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা নিয়ে আইন প্রণীত হয়। সে আইনের ১৯(১৩) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিদেশি কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সম্প্রচার বা সঞ্চালন করা যাবে না।’