সেট টপ বক্স না থাকলে ক্যাবল টিভি দেখা যাবে না


সেট টপ বক্স না থাকলে ক্যাবল টিভি দেখা যাবে না

ছবি : সংগৃহীত

 

৩০ নভেম্বরের পর সেট টপ বক্স না বসালে আর স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখা যাবে না। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের ক্যাবল নেটওয়ার্কিং পদ্ধতি ডিজিটাল করবে সরকার।

সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে। এতে বলা হয়, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে টিভি ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আসবে।

স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখতে ডিশ ক্যাবল গ্রাহকদের এই সময়ের মধ্যে ক্যাবল বা ফিড অপারেটরের সহযোগিতায় অ্যানালগ পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল সেট টপ বক্স স্থাপনের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায় ৩০ নভেম্বরের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখা যাবে না।

এর আগে সচিবালয়ে ৩১ অক্টোবর, রোববার ক্যাবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) এবং ড্রিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে বৈঠক করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

ওইদিন তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে নির্ধারিত সময়েই ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল করা করা হবে। ক্যাবল অপারটেররা জানিয়েছেন, তারা ডিজিটাল ডিভাইস বসিয়েছেন। এখন গ্রাহকদের সেট টপ বক্স সরবরাহ করা হবে। গ্রাহকেরা এই সেট টপ বক্স না বসালে ৩০ নভেম্বরের পর টেলিভিশন দেখার ক্ষেত্রে ব্যত্যয় হবে’।

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর ছাড়াও কুমিল্লা, বগুড়া, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজার জেলা শহরে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এসব অঞ্চলের সঙ্গে যশোর, গাজীপুর, নারায়ণঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনাসহ সব পুরোনো জেলা শহরের ক্যাবল নেটওয়ার্কও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে সরকারের নির্দেশনা মেনে ক্লিন ফিড চালুতে সহায়তা করায় ক্যাবল অপারেটরদের ধন্যবাদ জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশ ডিজিটাল হলেও এখনো ক্যাবল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটাল হয়নি। ভারতে হয়ে গেছে, নেপালে ব্যাপক আকারে হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এটি করলে সবার জন্যই সুবিধা। গ্রাহকেরা ভালোভাবে টেলিভিশন দেখতে পাবেন। ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল না হওয়ায় সরকার প্রতিমাসে ১২৫ থেকে ১৫০ কোটি টাকা ট্যাক্স পাচ্ছে না। ক্যাবল অপারেটিংয়ের সঙ্গে যারা যুক্ত তারাও কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে যেটুকু পাওয়ার কথা তা পায় না। কারণ ক্যাবল অপারেটরেরা ফিড অপারেটরের মাধ্যমে পরিচালনা করে। দেখা যায় ফিড অপারেটরের গ্রাহক আছে ১০ বা ৫ হাজার কিন্তু তাঁরা হিসাব দেয় ১ হাজারের। এভাবে তারাও বঞ্চিত হচ্ছেন। আমাদের টিভি কর্তৃপক্ষও নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। তারাও জানছেন না, কতো দর্শক তাদের টেলিভিশন দেখছেন। যখন নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড হয়ে যাবে তখন কোনো চ্যানেল যদি পে-চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায় তাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হবে’।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেট টপ বক্সের দাম ক্যাবল অপারেটরেরা একসঙ্গে নেবেন না, সেটি ১২ থেকে ৩০ কিস্তিতে নেবেন বলে জানিয়েছেন। এটা গ্রাহকদের সঙ্গে তাদের বিষয়, এটা সরকার ঠিক করে দেবে না। সরকার থেকে মনিটরিংয়েরও প্রয়োজন নেই। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। চাহিদা বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রাহক যদি চান, ক্যাবল অপারেটরের কাছ থেকে না নিয়ে নিজেই বাজার থেকে কিনে নিতে পারবেন। সেপ টপ বক্স নিয়ে কাউকে মনোপলি করতে দেব না’।

তার আগে তথ্য মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের পর বিজ্ঞাপনযুক্ত কোনো বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার না করার নির্দেশ দেয়। ফলে এক অক্টোবর থেকে ক্যাবল অপারেটর ও ডিটিএইচ বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনযুক্ত বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়।

এর দুই সপ্তাহ পর ১৪ অক্টোবর ক্লিনফিড চ্যানেল হিসেবে প্রথম সম্প্রচারে আসে জি বাংলা। এরপর বিজ্ঞাপন ছাড়াই বাংলাদেশে সম্প্রচারে ফিরে স্টার জলসা।