যে ডাক ধ্বনিত হলো জিআইজেসি-২১ সম্মেলনের শুরুতেই


যে ডাক ধ্বনিত হলো জিআইজেসি-২১ সম্মেলনের শুরুতেই

ছবি-সংগৃহীত

 

সম্প্রতি দুই অনুসন্ধানী সম্পাদককে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে দুটি জরুরি সত্য আমাদের সামনে এসেছে: গণতান্ত্রিক জবাবদিহি নিশ্চিত করার পক্ষে দাঁড়াতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব এবং ঠিক এ কারণেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা পড়ছেন অভূতপূর্ব হামলা ও হুমকির মুখে।

১ নভেম্বর, জিআইজেসি২১-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে পাঁচ অনুসন্ধানী সম্পাদকের তারকা-খচিত প্যানেলের সদস্যরা বলেছেন, এই যুদ্ধক্ষেত্র হল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং মুক্ত সংবাদমাধ্যমের টিকে থাকার লড়াইয়ের। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সবচে বড় এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনলাইনে। পাঁচ দিনের এই ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ১৪৮টি দেশ থেকে ১৮০০ সম্পাদক, রিপোর্টার, ও সিভিল সোসাইটি সদস্য। উদ্বোধনী অধিবেশনে অংশ নিয়েছিলেন সরাসরি যোগ দিয়েছেন ১০০টি দেশ থেকে ৫০০-রও বেশি সাংবাদিক।

ভুয়া তথ্য এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনসাধারণের মোহভঙ্গের বাড়তে থাকা ঝুঁকির সমান্তরালে আরেকটি প্রধান হুমকির কথা এই সম্পাদকেরা তুলে ধরেছেন। তা হলো: স্বৈরশাসক, “নির্বাচিত ক্লেপ্টোক্র্যাট”, এবং তাদের মিত্ররা একসঙ্গে মিলে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের জন্য যে হুমকি তৈরি করেছে।

ইতালিয় দার্শনিক আন্তোনিও গ্রামসিকে উদ্ধৃত করে প্যারিস ভিত্তিক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম, মিডিয়াপার্টের প্রেসিডেন্ট এডউই প্লেনেল বলেছেন, “পুরোনো দুনিয়াটি মরতে বসেছে, এবং নতুন আরেকটি দুনিয়া জন্ম নেওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। এখন সময়টি দানবদের। আর আমরা এই দানবদের বিরুদ্ধেই লড়ছি।”

কলম্বিয়া জার্নালিজম স্কুলের স্টেবাইল সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম-এর পরিচালক এবং উদ্বোধনী অধিবেশনের মডারেটর শিলা কোরোনেল বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “বিশ্বজুড়ে, গণতন্ত্র একটি জীবনমৃত্যু সংকটের সামনে পড়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, কারাবন্দী করা হচ্ছে, বা এমনকি হত্যাও করা হচ্ছে। আমরা ডিজিটাল নজরদারি ও হয়রানির শিকার হচ্ছি। মিথ্যার বন্যায় হাবুডুবু খাচ্ছি। এবং এই সব কিছুর ওপরে, আমরা কোভিড-১৯ও মোকাবিলা করছি, জাতিসঙ্ঘ যেটিকে সংবাদমাধ্যমের জন্য বিলুপ্তির ইভেন্ট হিসেবে সতর্ক করেছে।”

তো, কোরোনেল প্রশ্ন রেখেছিলেন: অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কি তাহলে এখন নিজেদের উচ্চাকাঙ্খার পাখা ছেঁটে ফেলা উচিৎ, নাকি গণতন্ত্র, জবাবদিহি, এবং সবার জন্য ন্যায্যতার ঝাণ্ডা হাতে লড়াই করা উচিৎ? বক্তাদের সবাই একবাক্যে জবাব দিয়েছেন: “লড়াই!”

কিন্তু কিভাবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের মতো সম্পদ-স্বল্পতায় থাকা একটি কমিউনিটি এই মারাত্মক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপের সামনে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে? যেখানে তার পক্ষে থাকা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং প্রায়ই বিভিন্ন দেশের সরকার যাদের “শত্রু” বা “গুপ্তচর” বলে অপবাদ দেয়?

অধিবেশন থেকে আসা স্পষ্ট উত্তর ছিল: নিজেদের নতুন দক্ষতা ও টুল দিয়ে সুসজ্জিত করার পাশাপাশি স্বাধীন নিউজরুমগুলোকে অবশ্যই নতুন মিত্র খুঁজতে হবে। অন্যান্য প্রশিক্ষক, সিভিল সোসাইটি সংগঠন, এমনকি প্রতিপক্ষ নিউজরুমের সঙ্গেও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

“সমাজের সঙ্গে আমাদের নতুন ধরনের মিত্রতা গড়ে তুলতে হবে। আমরা সমাজকে জাগিয়ে তুলি আমাদের উন্মোচন দিয়ে। কিন্তু সেটি সমাজ কতটা নিতে পারবে, পরিবর্তন করতে পারবে, রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলাতে পারবে- তা সমাজের ওপরই নির্ভর করে। আমাদের প্রথম মিশনটি হলো মানুষের জানার অধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ করা,” বলেছেন প্লেনেল।

 

ছবি: কাতা মাথে / রিমার্কার

লাতিন আমেরিকান সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (ক্লিপ)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মারিয়া তেরেসা রোন্দেরোস বলেছেন, “আমাদের অন্যদের সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করতে হবে। জোটবদ্ধতার সম্মিলিত ক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে: সহযোগিতা গড়ে তুলতে হবে। নাগরিক ও সিভিল সোসাইটি গ্রুপগুলোর সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। এমনকি সত্য বলার ক্ষেত্রেও আমাদের আরও চরমপন্থী (র‌্যাডিক্যাল) হতে হবে। যেগুলো দেখানো হচ্ছে না, সেগুলোই সত্যি সত্যি দেখাতে হবে। আপনি যখন এটি করতে পারেন, তখন অনেকেই আপনার দেওয়া তথ্যগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। হ্যাঁ, আপনি অনেকের শত্রু হবেন, কিন্তু অনেক বন্ধুও পাবেন।”

 

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সিভিল সোসাইটির সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া এবং সত্য প্রকাশে আরও র‌্যাডিকেল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মারিয়া তেরেসা রোন্দেরোস। ছবি: রোন্দেরোসের সৌজন্যে

 

সাংবাদিকদের অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে — কিন্তু সাংবাদিক হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তারা যেরকম সহজভাবে “নির্বাচিত স্বৈরশাসক” ও “কর্তৃত্বপরায়ন গণতন্ত্র” ধরনের প্রত্যয়গুলো ব্যবহার করছিলেন- তা ছিল এই অধিবেশনের একটি ভয় ধরিয়ে দেওয়া শিক্ষা। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়, প্রান্তীকরণের উত্থান, জনতুষ্টিবাদী রাজনীতি, কর্তৃত্বপরায়ন ক্ষমতা সংহত হওয়া; ইত্যাদি পরিস্থিতির মধ্যে কোরোনেল এই অস্বস্তিকর প্রশ্নটি ছুঁড়ে দিয়েছেন: স্বাধীন সাংবাদিকতাই কী এখন নতুন প্রতিরোধ?

বক্তাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছিল যে, সাংবাদিকতা, রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষও হতে পারবে না, বা ইস্যু-তাড়িত অ্যাক্টিভিজমও হতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা সত্যিই বিশ্বজুড়ে অগণতান্ত্রিক এবং মুক্তপ্রকাশ বিরোধীদের মোকাবিলা করার মতো একটি শক্তি।

ভারতের অগ্রণী অনুসন্ধানী ম্যাগাজিন, দ্য ক্যারাভান-এর নির্বাহী সম্পাদক বিনোদ কে. জোশি বলেছেন, “সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে আক্রমণের জবাব হলো আরও বেশি সাংবাদিকতা।”

নাইজেরিয়ার প্রিমিয়াম টাইমসের প্রধান নির্বাহী দাপো ওলোরুনয়োমি যোগ করেছেন: “আমরা ততটুকুই প্রতিরোধ করতে পারব, যতটুকু সেই মুহূর্ত আমাদের কাছে দাবি করবে। কিন্তু আমরা এই পেশার ডিএনএ কোনোভাবেই বদলাতে পারব না।”

রোন্দেরোসও একমত হয়ে বলেছেন, “অ্যাক্টিভিস্ট হয়ে পড়ার লড়াইয়ে যাবেন না, এবং সত্য ও ঘটনা অনুসন্ধানের মিশনের পথে নিজের মতামতকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেবেন না। আমাদের যে ধরনের প্রতিরোধ দরকার, তা হলো: নিজের কাজের জায়গাটি ঠিক রাখা। এমনকি সেটি আমাদের রাজনৈতিক আগ্রহের বিরুদ্ধে হলেও।”

দক্ষিণ আফ্রিকায় দুর্নীতিবাজ প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা থেকে শুরু করে স্পাইওয়্যার হ্যাকিংয়ের (অন্তত ১১টি দেশের সরকার এই হ্যাকিংয়ের নির্দেশ দিয়েছিল নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা মানুষদের বিরুদ্ধে) তথ্য উন্মোচন পর্যন্ত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনুসন্ধানী নিউজরুমগুলো এমন ব্যাপক সব পরিবর্তন এনেছে, যেগুলো তাদের সম্পদের বিচারে বেমানান।

প্রভাব তৈরির এই ইস্যুতে, কোরোনেল বক্তাদের কাছে একটি কঠিন প্রশ্ন রেখেছেন: অনুসন্ধানী উন্মোচন থেকে পরিবর্তন বা ন্যায্যতা আনার ক্ষেত্রে যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দূর্বল হয়, এবং পাঠক বা দর্শক খুব দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে কী হবে?

“অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পরিবর্তনের তত্ত্ব কী এখনো প্রয়োগযোগ্য? অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা বিশ্বাস করেন যে, অনিয়ম উন্মোচনের মাধ্যমে তাঁরা অনিয়মকারীকে ন্যায়বিচারের আওতায় আনবেন এবং সংস্কার করবেন। কিন্তু বর্তমানের বিষাক্ত ও কঠিন তথ্য জগতে সেটি কি আদৌ সম্ভব?” প্রশ্ন রোন্দেরোসের।

বক্তাদের জবাবগুলোকে কোরোনেল চারটি পয়েন্টে তুলে ধরেছেন:

ইতিহাস থেকে দেখা যায় — এমনকি তৎপর প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুপস্থিতিতেও — অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সত্যিকারের অনেক পরিবর্তন এনেছে। “সাংবাদিকরা যখন অনিয়ম উন্মোচন করেন, এবং সেখান থেকে যদি কোনো ন্যায়বিচার পাওয়া না-ও যায়, তারপরও সাংবাদিকেরা তাদের কাজ চালিয়ে যান। কারণ দীর্ঘমেয়াদে তাঁরাই জিতবেন,” বলেছেন রোন্দেরোস। “এটি জনপরিসরের সীমানা বাড়ায়,” যোগ করেছেন ওলোরুনয়োমি।

 

ভুয়া তথ্যের যুগে সত্যের জন্য লড়াইয়ের দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে প্যানেলিস্টদের জবাবের সারাংশ করেছেন শিলা কোরোনেল। ছবি: কোরোনেলের সৌজন্যে

 

সাহসী রিপোর্টিংয়ের ফলে সত্যিকারের জবাবদিহি নিশ্চিতের ঘটনা প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। এমনকি সবচে দমনমূলক সমাজগুলোতেও। যেমন, উদাহরণ হিসেবে রোন্দেরোস উল্লেখ করেছেন ভেনেজুয়েলার চার সাংবাদিকের কাজের কথা। পেশাগত কাজের কারণে তাদের তাঁরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু বিদেশে বসেই তাঁদের অনুসন্ধানের মাধ্যমে উন্মোচিত হয়েছে অ্যালেক্স সাব নামের এক অর্থ পাচারকারীর কর্মকাণ্ড। এবং এই রিপোর্টিংয়ের কারণেই সাবকে গ্রেপ্তার এবং সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে আর্থিক অপরাধের অভিযোগে।

এমনকি যখন তাৎক্ষণিক প্রভাব সম্ভবও হয় না, তখনও রিপোর্টাররা নানাবিধ প্রমাণ রেখে যান আগামী দিনের ইতিহাসবিদ, আইনজীবী ও ভোটারদের জন্য। নিজেদের নেওয়া ঝুঁকিগুলোর ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য সার্বিয়ার বেশ কয়েকজন অনুসন্ধানী সম্পাদক ঠিক এই অবস্থানটিই নিয়েছেন।

শুধু অনুসন্ধানী রিপোর্টিংয়ের নানা কর্মকাণ্ডের ফলেই নাগরিক চিন্তায় জবাবদিহির পারদটি ওপরে ওঠে। এবং “যেন সত্যিকারের গণতন্ত্রে আছেন”- এমন চিন্তা থেকে রিপোর্টিং করলে সাংবাদিকরা তাঁদের অনুসন্ধানের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেল্ফ-সেন্সরশিপ এড়াতে পারেন।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কমিউনিটিতে নব উদ্যম ও আশাবাদের কথাও জোরের সঙ্গে আলোচিত হয়েছে উদ্বোধনী সেশনে।

“আমার বয়স এখন ৬৯, এবং আমি নিজেকে এই কাজের জন্য ১৫ বছর আগের চেয়েও বেশি তরুন মনে করি। কারণ এখন সময়টা লড়াইয়ের!” বলেছেন প্লেনেল। “সীমানার বাধা ডিঙিয়ে প্রতিরোধ — জাতীয়তাবাদ ও বর্ণবাদের উত্থানের বিরুদ্ধে লড়াই — এবং সহযোগিতামূলক সাংবাদিকতা পারে নতুন ধরনের সংহতি তৈরি করতে। এবং এটি খুব ভালো খবর!”

রোন্দেরোস বলেছেন, “এখন লাতিন আমেরিকায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার স্বর্ণযুগ চলছে।”

বিভক্তি এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তবে নতুন নতুন সব ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং স্টোরিটেলিং মিডিয়াম (পডকাস্ট থেকে শুরু করে কিভাবে-আমরা-এটি-করেছি ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপ্লেইনার) নতুন অডিয়েন্স পাওয়া এবং পুরোনোদের সঙ্গে নতুন করে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ এনেছে নিউজরুমগুলোর সামনে।

“বিভক্তির এই বিশ্বে, মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করবে না যদি আপনি পুরোনো পদ্ধতিতেই সংবাদ দিয়ে যান,” বলেছেন রোন্দেরোস।

জিআইজেসি২১-এ স্বাগতম

উদ্বোধনী অধিবেশনের পাশাপাশি জিআইজেএন-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে সংঘবদ্ধ অপরাধ অনুসন্ধানের একটি বিস্তারিত ও বিশেষজ্ঞ গাইড। সম্মেলনের সময় যে চারটি বড় গাইড ও টুল প্রকাশ করা হবে; এটি ছিল তার মধ্যে একটি। এগুলোর মধ্যে আছে: অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য যাচাইয়ের গাইড, ছোট নিউজরুমে ভিডিও দল বানানোর রিসোর্স, এবং জার্নালিস্ট সিকিউরিটি অ্যাসেসমেন্ট টুল (জেস্যাট)। নিরাপত্তা যাচাইয়ের স্ব-মূল্যায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই টুলটি উন্মোচন করা হবে জিআইজেসি২১-এর দ্বিতীয় দিনে।

প্রথমবারের মতো পুরোপুরি অনলাইনে আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে বক্তাদের মতো একই রকম আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জিআইজেএন-এর নির্বাহী পরিচালক ডেভিড ই. কাপলান। একই সঙ্গে তিনি তুলে ধরেছেন ইতিহাসের দায়ের কথাও।

“শারিরীক আক্রমণ, ক্রমশ বাড়তে থাকা নজরদারি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, আইনি হেনস্তা, এবং অনলাইন ট্রোলিংয়ের (বিশেষভাবে আমাদের নারী সহকর্মীদের প্রতি) মধ্যেও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা খুবই ভালো এবং জীবন্ত আছে। এবং আমরা ক্রমেই বড় হচ্ছি,” বলেন কাপলান। “পাঁচ দিনের এই সম্মেলনে সাংবাদিকতার আধুনিক সব কলাকৌশল ও টুল নিয়ে কথা বলার জন্য আছেন ৬৫টি দেশের ২০০ জন বক্তা। সব সময়ের মতো, জিআইজেএন মনোযোগ দিয়েছে বাস্তব চর্চায়। ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জবাবদিহির অভাবকে তুলে ধরতে চাওয়া সাংবাদিকদের সাহায্য করার জন্য আমরা সব সময় আগ্রহী।”

অস্ট্রেলিয়ার সিডিনিতে জিআইজেসি২২-এর সহ-আয়োজক, জুডিথ নিলসন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মার্ক রায়ানের আমন্ত্রণের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কাপলান যোগ করেছেন: “আগামী বছর আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে সিডনিতে। আমরা মুখোমুখি এক জায়গায় জড়ো হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

(বিজেসি নিউজের পাঠকদের জন্য জিআইজেএন থেকে সরাসরি তুলে ধরা হলো)