ক্লিনফিড নিয়ে বাংলাদেশে জি বাংলা


ক্লিনফিড নিয়ে বাংলাদেশে জি বাংলা

ছবি : সংগৃহীত

 

প্রথম ভারতীয় চ্যানেল হিসেবে বাংলাদেশে বিজ্ঞাপন ছাড়া স্যাটেলাইট আপলিংক করছে জি বাংলা। বাংলাদেশের ক্যাবল অপারেটররা তা ডাউনলিংক করে পরীক্ষামূলকভাবে প্রচার করছেন। ফলে প্রায় দুই সপ্তাহ পর দেশের বিভিন্ন এলাকার দর্শকরা দেখতে পাচ্ছেন জনপ্রিয় ভারতীয় চ্যানেলটি।

এর আগে তথ্য মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের পর বিজ্ঞাপনযুক্ত কোনো বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার না করার নির্দেশ দেয়। ১ অক্টোবর থেকে ক্যাবল অপারেটররা বিজ্ঞাপন থাকা বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেন।

জি বাংলার সম্প্রচার সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-কোয়াবের সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বিজেসি নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে ক্লিনফিড মেনে ভারতীয় চ্যানেল জি বাংলার সম্প্রচার চলছে’।

জি বাংলার পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শুরু হলেও ভারতীয় অন্যান্য চ্যানেল কবে নাগাদ ক্লিনফিডসহ সম্প্রচারে ফিরবে তা নিশ্চিত নয় বলে জানান তিনি। তবে পর্যায়ক্রমে বন্ধ থাকা অন্য চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন কোয়াবের সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ।

জানতে চাইলে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসির চেয়ারম্যান ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান রেজোয়ানুল হক বলেন, ‘বিদেশী চ্যানেলের ব্রডকাস্টার এবং পরিবেশকরা ক্লিনফিডের ব্যাপারে অনেক সমস্যা, সময়ের ব্যাপার, অনেক টাকার ব্যাপার বলে দাবি করছিলেন। কিন্তু ক্লিনফিড দিয়ে জি বাংলার প্রচারের মাধ্যমে প্রমাণ হলো যে এসব কিছুই যুক্তিসঙ্গত নয়, শুধু অজুহাত ছিল। কারণ মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে তারা ঠিকই ক্লিনফিড দিতে পারছে। তারমানে এটা কঠিন কোনো কাজ ছিল না, তাদের সদিচ্ছার অভাব ছিল। এখন সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণে তারা এটা দিতে বাধ্য হয়েছে। বাকি চ্যানেলগুলোও ক্লিনফিড দিয়ে একইভাবে আসবে বলে আমরা আশা করছি’।

তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জি বাংলাসহ এখন বিবিসি, সিএনএন, আল–জাজিরা এইচডি, ডিডব্লিউ, কেবিএস ওয়ার্ল্ড, এআরআই র‍্যাংগ টিভি, এনএইচকে ওয়ার্ল্ড, সিজিটিএন, রাশিয়া টুডে, ফ্রান্স ২৪, লোটাস, ট্রাভেল এক্সপি এইচডি, আল কুরান, আল সুন্না, ট্রাভেল এক্সপি ও দূরদর্শন টেলিভিশন বাংলাদেশের দর্শকেরা দেখতে পাচ্ছেন। এর সবই ‘ক্লিন ফিড’ প্রচার হচ্ছে।

বাংলাদেশে ২০০৬ সালের ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা নিয়ে আইন প্রণীত হয়। সে আইনের ১৯(১৩) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিদেশি কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সম্প্রচার বা সঞ্চালন করা যাবে না।’

গত ১৫ বছরে বিভিন্নবার ক্লিনফিড বাস্তবায়নের সময় বেঁধে দেয়া হলেও সেটি কার্যকর না হওয়ায় এবার কঠোর অবস্থান নেয় বাংলাদেশ সরকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ভারতীয় চ্যানেল হিসেবে ক্লিনফিড দিচ্ছে জি বাংলা।

ক্লিনফিড বাস্তবায়নে সরকারের কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি। দীর্ঘদিন থেকে ক্লিনফিডের দাবি জানিয়ে আসছিলো সংগঠনটি। বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও দেশের টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো। এই উদ্যোগে সন্তুষ্ট না হলেও এখন পর্যন্ত সরকারকে সহযোগিতা করে চলেছেন ক্যাবল অপারেটররা।