লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে চার্জশিট


লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ছবি : সংগৃহীত

 

বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

শাহজাহানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে বিষয়টি জানা যায় ১৪ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার।

চার্জশিটভূক্ত অপর দুই আসামি হলেন, উইমেন চ্যাপ্টার ওয়েবসাইটের সম্পাদক সুপ্রীতি ধর লিপা ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সুচিষ্মিতা সিমন্তিম ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের পরিদর্শক নাজমুল নিশাত ৩ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) ৫৭ ধারা ও ৬৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

আল ইহসান সম্পাদক মামলায় লীনা হক নামের আরেক নারীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছিলেন। তবে তার পূর্ণাঙ্গ নাম–পরিচয় জানতে না পারায় মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে তসলিমাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল নিশাত।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, উইমেন চ্যাপ্টারে ২০১৮ সালে তসলিমা নাসরিনের ‘ধর্ষকের কাছে নারীর কোনো ধর্ম নেই’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার হয়।

এ ঘটনায় মাসিক আল-বাইয়্যিনাত ও দৈনিক আল ইহসানের সম্পাদক মাহবুব আলম বাদী হয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল তসলিমা নাসরিনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য শাহজাহানপুর থানাকে নির্দেশ দেন।

পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা অনলাইনে নিজেদের বিভিন্ন লেখা প্রকাশ এবং সেগুলো ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন করার অভিপ্রায়ে লিপ্ত রয়েছেন।

তসলিমা নাসরিনের জন্ম ১৯৬২ সালের ২৫ আগস্ট। আশির দশকে একজন উদীয়মান কবি হিসেবে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন তসলিমা। তিনি তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ এবং ধর্মবিরোধী মতবাদ প্রচার করায় ইসলামপন্থীদের রোষানলে পড়েন। পরবর্তীতে প্রাণনাশের হুমকি পেতে থাকায় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। পরে কিছুকাল তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন। এরপর তিনি ভারত সরকার কর্তৃক ভারতে অজ্ঞাতবাসে অবস্থানের সুযোগ পান। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে বসবাস করছেন।