‘৯ মাসে ১৫৪ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার’


‘৯ মাসে ১৫৪ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার’

ছবি : সংগৃহীত

 

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ১৫৪ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

১ অক্টোবর, শুক্রবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায় কেবল সেপ্টেম্বর মাসেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৩ সাংবাদিক।

১০টি জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ ও আসকের নিজস্ব সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করা হয়েছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ মাসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ১৫৪ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত সাংবাদিকদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৮ জন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মীদের দ্বারা ১৪ জন, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৩ জন, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ১৩ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

আর ১০৬ জন সাংবাদিক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় প্রভাবশালী দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সাংবাদিক নির্যাতন ছাড়াও ৯ মাসে নারী-শিশু নির্যাতন, সীমান্ত সংঘাত, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ও ভয়াবহতাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আসকের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯ মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে এবং ‘ক্রসফায়ারে’ মোট ৪৮ জন মারা গেছেন।

একই সময়ে কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা যান ৬৭ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৫ ও হাজতি ৪২ জন।

এই সময়ে যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছেন মোট ১৮২ নারী। যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৬০ জনকে এবং নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১২ জন নারী। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৯৮ জন।

শিশুর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন সংক্রান্ত পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক। গত নয় মাসে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১ হাজার ৬৩৬ শিশু। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয় ৪৭১ জন এবং শারীরিক ও যৌন নির্যাতনসহ নানাভাবে সহিংসতার শিকার হয় ১১৬৫ শিশু। এই ১১৬৫ জনের মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয় ৬৪৮ কন্যাশিশু এবং বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৬৪ জন ছেলে শিশু। ২০২০ সালের এই সময়কালে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল ১৫২৩ শিশু।

এই সময়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৮৫ নারী। যার মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার হন ৮৭৯ জন এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ২০৩ নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩৯ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ৮ নারী। এছাড়া ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ২৫৬টি।

এই সময়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১০১ জন নারী। এর মধ্যে আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন এবং হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন। আর যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন পুরুষ, যার মধ্যে ৪ জন পুরুষ খুন হয়েছেন।