বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশী চ্যানেল : অক্টোবর থেকে কার্যকর


বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশী চ্যানেল : অক্টোবর থেকে কার্যকর

ছবি : সংগৃহীত

 

দেশে প্রচারিত বিদেশী চ্যানেলগুলোতে হর-হামেশাই বিদেশী বিজ্ঞাপন দেখা যায়। তবে সেপ্টেম্বরের পর থেকে বিজ্ঞাপন সহ অনুষ্ঠান চালাতে পারবে না বিদেশী চ্যানেলগুলো। এ নিয়ে কিছুদিন আগেই সচিবলায়ে সতর্ক করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরের পরে ‘ক্লিন ফিড’ ছাড়া বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করলে আইন প্রয়োগ করা হবে।

সেদিন বৈঠকে কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাটকো, বিদেশি চ্যানেলের ডিস্ট্রিবিউটর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সেদিন সেই বৈঠক শেষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘দেশে যেসব বিদেশি চ্যানেল আছে আইন অনুযায়ী তারা ‘ক্লিন ফিড’ চালাতে বাধ্য। তাগাদা দেয়ার পরও এসব চ্যানেল ক্লিন ফিড করে পাঠাচ্ছে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৩০ সেপ্টেম্বরের পর দেশে কোনও অবস্থায়ই ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল চালাতে দেয়া হবে না। এরপর আইন প্রয়োগ করা হবে। আইন অনুযায়ী ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশী চ্যানেল আমাদের এখানে সম্প্রচার করতে পারে না’।

ছবি : সংগৃহীত

ক্লিন ফিড অর্থ কী? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই আসতে পারে। ক্লিন ফিড হলো বিদেশি চ্যানেলে কোনো বিজ্ঞাপন থাকতে পারবে না৷ বর্তমান আইনেও আছে বিদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান বাংলাদেশে দেখাতে হলে ‘ক্লিন ফিড' দেখাতে হবে৷ অনুষ্ঠানে থাকবে না কোনো বিজ্ঞাপন।

এদিকে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের কেবল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করা হবে। এ নিয়ে ব্যবস্থাও নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। ৩০ নভেম্বরের পরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে কাজ করবে না কোনো এনালগ সিস্টেম।

এসব কাজ কীভাবে হবে সেটি নিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিপত্র। সম্প্রচার হবে সেট আপ বক্সের মাধ্যমে।

এছাড়া, বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর ছাড়াও কুমিল্লা, বগুড়া, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজারে অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করা হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। নভেম্বরেই এসব কীভাবে করা যায় তা ঠিক করা হবে।

ছবি : সংগৃহীত

তাছাড়া, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো টিভি চ্যানেল ভিডিও স্ট্রিমিং করে দেখানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।

এসব বন্ধে তথ্য মন্ত্রণালয়, টেলিকম বিভাগ ও আইসিটি বিভাগের সাথে অংশীজনদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অন্যদিকে, দেশে ডিটিএইচ লাইসেন্স দেয়া আছে দুটি। একটি আকাশ, আরেকটি বিটিভিকে। সহসাই বিটিভি কার্যক্রমে যাবে।

বাংলাদেশে বিদেশী চ্যানেলের সাথে কাজ করে মূলত চারটি ডিস্ট্রিবিউটর বা প্রতিষ্ঠান। তাদের মাধ্যমেই ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক বা দুবাইভিত্তিক কিছু টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশে অনুষ্ঠান প্রচার করে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশীয় বেসরকারি টেলিভিশনগুলো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলো। এই চাপ অনেকবছর যাবতই চলছে। তবে এবার এ বিষয়ে কঠোর হবার দাবি জানিয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশনের মালিকরা। কারণ তারা মনে করেন বাংলাদেশে কোনো কর না দিয়েই বিজ্ঞাপন প্রচার করে বেশীরভাগ বিদেশী চ্যানেল।

ছবি : সংগৃহীত

এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে যে সুযোগ বিদেশি চ্যানেল পাচ্ছে সেটি বন্ধ হবে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারকে কর দিয়েও পর্যাপ্ত বিজ্ঞাপন পাচ্ছেনা, সুরাহা হবে সেটির।

এরইমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি চ্যানেলে ক্লিনফিড চালানো এবং মেট্রোপলিটন শহর সহ গুরুত্বপূর্ণ শহরে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল পদ্ধতি চালুকরণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল চালানো কতোটুকু সম্ভব হয় সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে, দেশী চ্যানেলগুলো মনে করছে সরকার তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে অবসান হবে এ পরিস্থিতির।