সামিয়া রহমানের পদাবনতি কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রুল


সামিয়া রহমানের পদাবনতি কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রুল

সামিয়া রহমান। ছবি : সংগৃহীত

 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানকে পদাবনতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথি ২১ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

৫ সেপ্টেম্বর, রবিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট পদাবনতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী সামিয়া রহমান।

এ বছরের ২৮ জানুয়ারি গবেষণায় জালিয়াতির অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানকে পদাবনমন দেয়া হয়। এ শিক্ষককে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারি অধ্যাপক করে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।

এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।

এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।

শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম' গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়।

ঐ তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত জানুয়ারি মাসে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারি অধ্যাপক করে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটি।

গবেষণা প্রবন্ধ চুরি করার শাস্তি হিসেবে তার পদাবনতি দেয়া হয়। 

একইসঙ্গে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকেও একই শাস্তি দেয়া হয়।

অভিযোগ আর শাস্তির পরিপ্রেক্ষিতে সামিয়া রহমান সেসময় তার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, তাকে ফাঁসানো হয়েছে।