শিশু নিগ্রহের অভিযোগে বরখাস্ত হোসাইন সোহেল


শিশু নিগ্রহের অভিযোগে বরখাস্ত হোসাইন সোহেল

নিউজ চ্যানেল ৭১ টিভির সিনিয়ার সাংবাদিক হোসাইন সোহেলের বিরুদ্ধে শিশু নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তুলেছেন, একই চ্যানেলে কর্মরত তাঁরই এক সহকর্মী, যিনি চ্যানেলটির বার্তা প্রযোজক। গেলো ১৭ ডিসেম্বর এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে অফিসিয়ালি অভিযোগ দেন তিনি।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে হোসাইন সোহেলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে ৭১ টিভি কর্তৃপক্ষ। 

লিখিত অভিযোগে ভিকটিম শিশুটির বাবা বলেন, গত ১১ ডিসেম্বর রাত নয়টার দিকে সাংবাদিক হোসাইন সোহেল ও  কয়েকজন বন্ধু তার বাসায় আড্ডা দিতে আসেন। ভোর রাতের দিকে তার আট বছরের ছেলের চিৎকার শুনে, তিনি সন্তানের কাছে যান। এরপর ছেলের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনেন। 

অভিযোগকারীর কাছ থেকে জানা যায়, স্ত্রী'র মৃত্যুর পর থেকে ছেলেটি মনমরা হয়ে থাকতো। তাই নানা সময়ে বাসায় অতিথি আসলে সে আনন্দ পেতো, তাদের সঙ্গে গল্প করতে পছন্দ করতো। ১১ ডিসেম্বর রাতে তারা সবাই গল্প ও আড্ডা দিচ্ছিলেন। শিশুটির বাবা জানান, এ সময় সোহেল ও তার বন্ধুরা সামনের চেয়ারে বসে ছিল এবং শিশুটি তাদের পেছনের দিকে বিছানায় শুয়ে ছিল।

এভাবে আড্ডার এক পর্যায়ে সোহেল উঠে তার ছেলের কাছে যান। এর কিছুক্ষণ পরে চিৎকার শুনে তিনি ছেলের কাছে গেলে সে তখন জানায়, সোহেল তার প্যান্ট খোলার চেষ্টা করেছে এবং তাকে নোংরা প্রস্তাব দিয়েছে।

সে রাতে হোসাইন সোহেল ও তার বন্ধুদেরকে বাসা থেকে চলে যেতে বলেন ওই প্রযোজক। পরেরদিন অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে, প্রযোজক পিতার অভিযোগের পর হোসাইন সোহেল ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন, “একজন শিশু, বাবা ও একদল সহকর্মী। এরপর জগতের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অপবাদ। যাই হোক, জানিয়ে রাখতে চাই, সবকিছুর পরও আমি ভেঙ্গে পড়ছিনা। কারণ আমি কী, কেমন এবং কতটুকু তা হিতাকাঙ্ক্ষী বন্ধুরা ভালোই জানেন। শুধুমাত্র কাজ এবং সত্য বলার জন্যও শত্রু নেহায়েত কম নেই। তাদের কেউ কেউ এখন নোংরা, নগ্ন উল্লাস করতেই পারে। তারা যেদিন ক্লান্ত হবে সেদিন না হয় আমি দু’টো কথা জানাবো”। 

সোহেল আরও লিখেন, “দীর্ঘ বছর অনেক লড়াই করে নিজেকে দাঁড় করিয়েছি। আবার লড়াই করে নিজের জায়গা নিজে করে নিয়েছি। তাই লড়াই করেই বাঁচতে হবে তাও জানা আছে।

শুধু ফেসবুক নয় পুরো প্রকৃতিতে আমার অনেক ভালোবাসার মানুষ রয়েছে। তাদের দুচিন্তায় না ফেলে স্পষ্ট জানাতে চাই, আমি এমন কোন কাজ বা কুকর্ম করিনি, যা তাদের মাথা হেঁট করে দেয়। আমার পারিবারিক ও সামাজিক শিষ্টাচার অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিশ্বাসের অমর্যাদা করতে আমাকে শেখায়নি”।

তিনি লিখেন,  “প্রকৃতি সুরক্ষার সংবাদ করতে গিয়ে সবার মন রক্ষা করা যায়নি। আবার হিংসার জ্বলনে কারও জন্য তাদের মতো সহকর্মীও হতে পারিনি বা পারবোনা। গত এক দশক ধরেই অসহনীয় নোংরা অফিস পলিটিক্সে জর্জরিত। তবে কোনকিছু প্রমাণ হওয়ার আগেই যারা ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছেন, ফোনে হুমকি দিচ্ছেন বা কুৎসিত এসএমএস পাঠাচ্ছেন তাদের আমি ছেড়ে কথা বলবো না। মনে রাখবেন, আইসিটি অ্যাক্ট বলে একটি আইন এখনো আছে। আর আপনাদের এসব কর্মকাণ্ডের স্ক্রিনশট, রেকর্ড আমার কাছে আছে”...

এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।