কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী মারা গেছেন

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী মারা গেছেন। ২৮আগস্ট, শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরান ঢাকায় নিজ বাসায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া, শোক প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

৬ মাস আগে তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। ক্যানসার তার শ্বাসযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তিনি কিছু খেতে পারছিলেন না। কেমো থেরাপি  নেয়ার মতো শারীরিক অবস্থাও তার ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসাতেই তার চিকিৎসা চলছিল। সবশেষ ক্যানসারের কাছে হার মানলেন কথাসাহিত্যিক বুলবুল চৌধুরী।

সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে বুলবুল চৌধুরী একুশে পদক, ২০১১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান । এছাড়া তিনি হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদদীন স্মৃতি পুরস্কার এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পান।

বুলবুল চৌধুরী ১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট গাজীপুরের দক্ষিণবাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়ালেখা করেছেন তখনকার জগন্নাথ কলেজে। জগন্নাথ কলেজে গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় ‘জোনাকি ও সন্নিকট কেন্দ্র’ গল্পের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন।

তার প্রথম লেখা ১৯৬৭ সালে। তার প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘টুকা কাহিনী’। আত্মপ্রকাশের শুরুতেই এ গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সাহিত্য জগতে সাড়া ফেলেন।

তিনি তার অধিকাংশ লেখায় গ্রামীণ জীবনকে নানা আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া, নগরায়নের বিভিন্ন জটিলতাও তার লেখালেখিতে অনন্য বিচিত্রতায় উঠে এসেছে।

বুলবুল চৌধুরী লেখালেখির বাইরে পেশাগত জীবনে সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বহুদিন। কাজ করেছেন দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন দৈনিকে। তার প্রকাশিত ছোট গল্পগ্রন্থগুলো হলো- ‘টুকা কাহিনী’, ‘পরমানুষ’, ‘মাছের রাত’ ও ‘চৈতার বউ গো’।

তার লেখা উপন্যাসের তালিকায় রয়েছে- ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’, ‘কহকামিনী’, ‘তিয়াসের লেখন’, ‘অচিনে আঁচড়ি’, ‘মরম বাখানি’, ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ‘ইতু বৌদির ঘর’ এবং ‘দখিনা বাও’। তার আত্মজীবনীমূলক দুটি গ্রন্থের নাম ‘জীবনের আঁকিবুঁকি’ ও ‘অতলের কথকতা’।

‘গাঁওগেরামের গল্পগাথা’, ‘নেজাম ডাকাতের পালা’, ‘ভালো ভূত’ আর ‘প্রাচীন গীতিকার গল্প’ নামক কিশোর গ্রন্থের রচয়িতাও তিনি।