নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম


নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

 

তালেবান বা তাদের প্রতি সমর্থনমূলক পোস্টগুলো নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বিভিন্ন দেশে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত তালেবানরা আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার পর নতুন এই সংকট দেখা দিয়েছে।

তবে ফেসবুক এরইমধ্যে নিশ্চিত করেছে যে তারা তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। অতএব ফেসবুক সেবাগুলোতে তালেবানদের দেওয়া পোস্ট নিষিদ্ধ। পাশাপাশি তালেবানদের প্রতি সমর্থনমূলক সমস্ত কনটেন্ট ছবি, পোস্ট, ভিডিও একইভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ফেসবুক।

নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তালেবান সদস্যরা ফেসবুক নিয়ন্ত্রণাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপের অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড এনক্রিপটেড মেসেজিং সেবা ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখেছে। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে ফেসবুকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিধিনিষেধের আওতায় থাকা কোনো সংগঠনের সঙ্গে কোনো হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেলে তার অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়ার মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

এদিকে, তালেবানের মুখপাত্ররা অনুসারীদের কাছে বার্তা পৌঁছানোর জন্য টুইটার ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষ ‘সহিংস প্রতিষ্ঠান ও বিদ্বেষমূলক কনটেন্ট’ বিষয়ক নীতিমালার কথা, বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে। তবে তারা কীসের ভিত্তিতে এ শ্রেণিবিন্যাস করে থাকে, সে ব্যাপারে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। টুইটারের নীতিমালা অনুযায়ী বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছড়ায় এমন কোনো সংগঠন তাদের সেবা গ্রহণ করতে পারবে না।

গুগলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউটিউব, এ বিষয়ে রয়টার্সকে সরাসরি কোনো উত্তর দেয়নি। তবে তালেবানের ওপর বিধিনিষেধের বিষয়ে তারা জানায়, বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন ও সহিংস অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য তারা বিভিন্ন দেশের সরকারের ওপর নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় তালেবানের নাম নেই উল্লেখ করে ইউটিউব আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে ‘বিশেষায়িত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী দল’ হিসেবে বিবেচনা করে এবং কালো তালিকাভুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ধরণের সম্পদ থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের তাদের সঙ্গে কোনো ধরণের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

তালেবানরা ক্ষমতায় ফিরে আসায় বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার খর্ব হবে, বিশেষ করে নারীদের অধিকার হুমকির মুখে পড়বে বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। দেশটি বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।

তবে তালেবান নেতারা তাদের বক্তব্যে শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৈরি এবং তারা আফগান নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে তারা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। এমনকি তারা সরকার গঠনে নারীদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো চলতি বছর বিশ্বনেতা ও বিভিন্ন দলের প্রধানদের অ্যাকাউন্ট নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এরইমধ্যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে।