সাংবাদিকদের ফোন ও ইমেইল রেকর্ড জব্দ করবে না যুক্তরাষ্ট্র


সাংবাদিকদের ফোন ও ইমেইল রেকর্ড জব্দ করবে না যুক্তরাষ্ট্র

সাংবাদিকের সোর্সের নিরাপত্তা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে মূল্যায়ন করে তথ্য ফাঁসের ঘটনার তদন্তে সাংবাদিকের ফোন এবং ই-ইমেল রেকর্ড জব্দ করবে না যুক্তরাষ্ট্র। ৫ জুন, শনিবার এ ঘোষণা দিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের জনসংযোগ পরিচালক অ্যান্থনি কোলে বলেছেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশনা অনুসারে তথ্য ফাঁসের ঘটনার তদন্তে সোর্সের তথ্য জানতে সাংবাদিককে আইনগতভাবে বাধ্য করার চর্চা আর অনুসরণ করবে না বিচার বিভাগ।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এই ঘোষণাকে মার্কিন বিচার বিভাগের নীতিগত বড় পরিবর্তন বলে মনে করছে। তাদের এক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, যখন তথ্য ফাঁসের ঘটনার তদন্তে সাংবাদিকের তথ্যদাতাদের চিহ্নিত করতে তাঁদের ই–মেইল ও ফোন রেকর্ড জব্দ করার ঘটনা বাড়ছে তখনই এই ঘোষণাটি এসেছে। তবে এই বিভাগের আনুষ্ঠানিক নির্দেশিকায় পরিবর্তন না আসায় ঘোষণাটি পরবর্তীতে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে বলেও জানিয়েছে সিএনএন।

সম্প্রতি মার্কিন বিচার বিভাগ গোপনে নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন, ওয়াশিংটন পোস্টসহ আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিককের তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসছে।

এ ঘোষণার একদিন আগেই নিউইয়র্ক টাইমসের আইনজীবী বলছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে বিচার বিভাগ তাদের চার সাংবাদিকের ই-মেইল তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করেছে। চলতি বছরের শুরু দিকে বাইডেন প্রশাসনও নিউইয়র্ক টাইমসের কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর কাছে সংবাদপত্রটির সাংবাদিকদের ই–মেইল তথ্য জানতে চায় এবং তা বার্তাকক্ষ ও নির্বাহী সম্পাদককে জানাতে নিষেধ করে। এছাড়াও নিউইয়র্ক টাইমসের ই-মেইল ব্যবস্থা গুগলের ব্যবস্থাপনায় থাকায় গুগল থেকে নিউউইয়র্ক টাইমসের চার সাংবাদিক ম্যাট আপুজ্জো, অ্যাডাম গোল্ডম্যান, এরিক লিচব্লু এবং মাইকেল স্কিমিটের ই–মেইল তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা করেছিল বিচার বিভাগ।

তবে এ বিষয়ে ৪ জুন পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের কেউই অবগত ছিলেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি। ফৌজদারি অপরাধের মামলার তদন্তে বিচার বিভাগ পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে এবং তদন্তে হোয়াইট হাউস হস্তক্ষেপ করে না বলেও যোগ করেন তিনি।

এর আগে গত মাসে সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন গোপনে সিএনএন সংবাদিক বারবারা স্টারের ২০১৭ সালের ই–মেইল ও ফোন রেকর্ড জোগাড় করেছে। ওয়াশিংটন পোস্টও এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) তদন্তের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহকারী তিন সাংবাদিকের ২০১৭ সালের ফোন রেকর্ড জোগাড় করেছিল ট্রাম্প প্রশাসনের বিচার বিভাগ।

এ বিষয়ে সে সময় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সিএনএনকে বলেছিলেন, তিনি বিচার বিভাগকে সাংবাদিকের ই–মেইল ও ফোনের রেকর্ড জব্দ করতে দেবেন না।

জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতির এক মাস পরে ৫ জুন, শনিবার এ ধরনের ঘোষণা আসলো জো বাইডেনের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে। ওই দিন এক বিবৃতিতে বিচার বিভাগের জনসংযোগ পরিচালক অ্যান্থনি কোলে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে মার্কিন বিভার বিভাগ মূল্যায়ন করে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিশ্চিতে এই বিভাগ সব ধরনের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।