‘গুজব’ ছড়ানোর অভিযোগে মিয়ানমারে সাংবাদিক কারাগারে 


‘গুজব’ ছড়ানোর অভিযোগে মিয়ানমারে সাংবাদিক কারাগারে 

‘গুজব’ ছড়ানোর অভিযোগে দুই সাংবাদিককে দুই বছরের জেল দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক-জান্তা। বুধবার (২ জুন) সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের সংবাদকে ‘গুজব’ আখ্যা দিয়ে দক্ষিণ মিয়েকের একটি সামরিক আদালত এই শাস্তি প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃত অং কিয়াউ ডেমোক্র্যাটিক ভয়েস অব বার্মা (ডিভিবি) এবং জউ জউ মিজিমা নিউজে ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাদেরকে ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইন ব্যবহার করে সাজা দেয়া হয় যে আইনে ‘মিথ্যা তথ্য ছড়ানো’কে অপরাধ হিসেবে সম্প্রতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের পর থেকে অং কিয়াউ ডিভিবির তৃতীয় এবং জউ জউ মিজিমা নিউজের পঞ্চম সাংবাদিক হিসেবে গ্রেফতার হলেন। গ্রেফতারের সময় নিজের গ্রেফতারের ঘটনা সরাসরি সম্প্রচার করছিলেন অং কিয়াউ।

ডিভিবি ও মিজিমা নিউজের দাবি, জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ক্ষমতা দখলের পর তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সংবাদ প্রচারের কারণেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সামরিক জান্তা অবৈধভাবে অং কিয়াকে আটক করছে এবং এটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে ডিভিবি।

অন্যদিকে জউ জউ এর মুক্তির দাবি করে মিজিমা নিউজ এক বিবৃতিতে বলেছে, মিজিমা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কোন অপরাধ নয়। তাই মিজিমাসহ মিয়ানমারের সকল গণমাধ্যমকে অবাধে কাজ করার অনুমতি দেয়া উচিত।

পর্যবেক্ষক সংগঠন রিপোর্টিং আসিয়ান বলছে, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৮৭ জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫১ জন এখনো বন্দি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই অভিযোগগুলোকে ‘রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত’ এবং ‘মেকী’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।

অভুত্থ্যানের পর থেকে জান্তা সরকার ডিভিবি এবং মিজিমাসহ বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করে তাদের ইন্টারনেটের অ্যাক্সেসও সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে এবং কয়েকটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন নিষিদ্ধ করেছে। যুক্তরাষ্টসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ এসব ঘটার নিন্দা জানিয়ে আসছে। ১ ফেব্রুয়ারি জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকার ক্রমাগত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত করে আসছে।