চিত্রকর্মে গণমাধ্যমকর্মীদের লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি


চিত্রকর্মে গণমাধ্যমকর্মীদের লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি

ছবি-মনন মুনতাকা

করোনাকালে গণমাধ্যমকর্মীদের জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালনের এক অসামান্য চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করলো ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার, বিজেসি। ২৩ নভেম্বর, জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত তিন দিনের এই চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ ভাইরাস যেদিন থেকে বাংলাদেশে হানা দিয়েছে, সেদিন থেকেই সমুখ সারিতে সম্প্রচার সাংবাদিকরা। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, মাঠ পর্যায় থেকে তারা তুলে আনছেন দেশের সবশেষ পরিস্থিতি। শব্দ ও ছবির মাধ্যমে সচেতন করছেন দেশবাসীকে। কিন্তু খবরের পেছনে থেকে সবার জন্য সংবাদ সংগ্রহ করলেও, তাদের খবর ছিলো অনেকেরই অজানা। করোনাযোদ্ধা সে সব সংবাদকর্মীর সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের গল্প যেন ইতিহাস থেকে হারিয়ে না যায়, সেজন্য ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে গত নয় মাসে সম্প্রচার সাংবাদিকদের সংগ্রাম, আর মানবিকতার বিরল প্রতিচ্ছবি উঠে আসে।

ছবি-মনন মুনতাকা
দেশ বরেণ্য শিল্পী শাহবুদ্দিন আহমেদ, মো: মনিরুজ্জামান, গুলশান হোসেন, তাহমিনা হাফিজ লিসা এবং নাসির আলী মামুন তুলির আঁচড়ে গণমাধ্যমকর্মীদের লড়াইয়ের কিছুটা ফুটিয়ে তোলেন। 
তিনদিনের চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে গণমাধ্যমকর্মী আইন চূড়ান্ত করার তাগিদ দেন সিনিয়র সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বিজেসি’র সদস্য সচিব, শাকিল আহমেদ বলেন, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিক এবং সম্প্রচার গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষায় আলাদা সেল গঠন করতে হবে।অনুষ্ঠানে, গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য সরকারী সুরক্ষা ও প্রণোদনা নিশ্চিতের দাবি জানান ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি’র সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
করোনা মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের ত্যাগ ও সাহসী ভূমিকার সাধুবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাকালে সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যূতি অত্যন্ত দুঃখজনক। গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত পাসের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলেও জানান ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় তথ্যমন্ত্রী সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ইতিবাচক দিকগুলোও তুলে ধরার তাগিদ দেন।

ছবি-মনন মুনতাকা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ডঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. সালেহ মোহাম্মদ তুষার, শিল্পী মনিরুজ্জামান ও বিজেসি’র বোর্ড অব ট্রাস্টি রাশেদ আহমেদ। এছাড়া, প্যারিস থেকে ভিডিও কলে যোগদেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে যোগ দেন শিল্পী গুলশান হোসেন। 

সমাপনী দিনে বিজেসির উদ্যোগে সম্প্রচারকর্মীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, হাসপাতাল নির্মাণে সহায়তা করবে তথ্য মন্ত্রণালয়। চিকিৎসক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবেও এ উদ্যোগের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজেসির নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে বক্তারা বলেন, টেলিভিশন সাংবাদকর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত ও নানা ধরনের সুরক্ষা পণ্য প্রদানের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বিজেসি। সংগঠনটির ট্রাস্টি রাহুল রাহার সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এনামুল হক, গাজী গ্রুপের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মর্তুজা, বিজেসি’র সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, ডা. সালেহ আহমেদ, আশরাফুল হকসহ আরো অনেকে।
গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনী ২৩ নভেম্বর শুরু হয়ে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রাখা হয়।