বিধানসভা নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়া


বিধানসভা নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়া

শুধু ভোটের ময়দান নয়, পশ্চিমবঙ্গে তীব্র লড়াই দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও৷ ভোটযুদ্ধে অংশ নেয়া শিবিরগুলি ভোটারদের আকর্ষণ করতে ব্যবহার করছে নানা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম৷

সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেল ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ছুঁতে চাইছে জনতাকে৷ বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহ বলেছেন, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে সাফল্যের পেছনে দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অবদান উল্লেখযোগ্য৷ তাই পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনি লড়াই যখন তুঙ্গে, তখন সামাজিক মাধ্যমে বিজেপির তৎপরতাও তুঙ্গে৷ 

একই ফর্মুলায় হাঁটছে রাজ্যের শাসকদল৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে মনোনয়নপত্র জমা দিতে  গিয়ে দেড়দিনে ২০ বার ফেসবুক লাইভে এসে ৪০ লক্ষের উপর দর্শক পেয়েছেন৷ অন্যদিকে বাম-কংগ্রেসও নিজস্ব আইটি সেলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে নানা ধরনের বার্তা, কার্টুন এবং প্যারোডি৷ পাশাপাশি নেতা-নেত্রীদের স্লোগান, বক্তব্য সব কিছু ঘিরেই মিম তৈরি হচ্ছে৷ 

দলবদল করছেন যারা, তারাও বাদ যাচ্ছেন না৷ এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের চোট নিয়েও সোশ্যল মিডিয়ায় মিম, ছড়া, কার্টুন বের হয়েছে৷ 

বিজেপির লক্ষ্য
সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে দলের বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচিতে কেন্দ্রের শাসকদলই সবচেয়ে এগিয়ে৷ এজন্য সব ধরনের সামাজিক মাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন তারা৷ অমিত শাহ সম্প্রতি একটি দলীয় বৈঠকে হোয়াটসঅ্যাপে ৫০ লক্ষ মেসেজ ছড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবরে প্রকাশিত৷ বিজেপির নিজস্ব সামাজিক মাধ্যমের তৈরি ‘মোদী পাড়া' নামে একটি অ্যাপে দু কোটি মানুষকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷

তৃণমূলের কৌশল
কেন্দ্রের প্রকল্পের তুলনায় রাজ্যের প্রকল্প কতটা ভালো, রাজনৈতিক ব্যঙ্গ বা কার্টুনের মাধ্যমে তা সোশ্যাল মিডিয়া-মঞ্চে প্রচারের জন্য তৃণমূলও প্রস্তুত৷ অমিত শাহের সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে বৈঠকের পরেই তৃণমূল তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে৷ তৃণমূলের দাবি, ধাপে ধাপে রাজ্যের ২৯৪ বিধানসভা কেন্দ্রেই এই প্রশিক্ষণ হবে৷ ফেসবুক ও টুইটারে তৃণমূলের শীর্ষ সংগঠনের যে প্রচার ব্যবস্থা তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিজ্ঞ দুজনকে৷ জেলা স্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা গ্রুপ বা পেজগুলিকে সাজানোর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে আরো বেশি৷

বামেদের ঝোঁক
ভোটের অনেক আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বামপন্থি দলগুলো সক্রিয় বলে দাবি করছেন কর্মীরা৷ রীতিমতো ছক কষে তাই সোশ্যাল মিডিয়ার ভলান্টিয়ারদের সাহায্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে টুম্পা সোনার মতো প্যারোডি বা কার্টুনরঙ্গ৷ সঙ্গে রয়েছে নেতাদের লাইভ ভাষণও৷ ভোটকেন্দ্রিক কনটেন্ট তৈরি করার পরে তা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে দেওয়ার কর্মসূচিতে আপাতত অনেক কিছুই৷

কড়া নজর কমিশনের
এবারের ভোটে সোশ্যাল মিডিয়াতেও কড়া নজর রাখছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন৷ গত লোকসভা ভোট থেকেই প্রার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টও প্রকাশ্যে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন৷ নির্বাচনে বিজ্ঞাপনী প্রচার থেকে এতদিন ছাড় পেতো টুইটার ট্রেন্ডিং এবং হ্যাশট্যাগ৷ এবার সেগুলিকেও নির্বাচনি প্রচারের তালিকায় ধরা হবে৷ জেলা ও ব্লকস্তরে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক প্রচার নজরে রাখতে কমিশন জেলাভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং সেল তৈরি করেছে৷

খবরসূত্র: ডয়েচে ভেলে