ফেসবুক-গুগল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক আইন পাস


ফেসবুক-গুগল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক আইন পাস

ফেসবুক-গুগলে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে ঐতিহাসিক আইন পাস করলো অস্ট্রেলিয়া। গুগল-ফেসবুককে সংবাদের জন্য সংবাদ সংস্থাকে অর্থ দেয়ার বিধান রেখে আইনটি পাস হয় পার্লামেন্টে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বিতর্ক চলছিল অনেক দিন ধরেই। কিন্তু সেই তর্ক উপেক্ষা করেই নতুন আইন পাশ করল অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট। সুদূরপ্রসারী সেই আইন দেশের ঐতিহ্যবাহী সংবাদমাধ্যমগুলিকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে বলে সরকারের বক্তব্য। পাশাপাশি সত্যনিষ্ঠ খবরের প্রতিও দায়বদ্ধ থাকা যাবে বলে সরকার মনে করছে। এছাড়া ‘নিউজ মিডিয়া অ্যান্ড ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মস ম্যান্ডাটরি বার্গেনিং কোড’ নামের এই আইন সংবাদ ব্যবসার জন্য ন্যায্য পারিতোষিক নিশ্চিত করবে বলেও সরকারের মনোভাব।

শুরুতে আইনটির তীব্র বিরোধিতা করেছিলো ফেসবুক ও গুগল। যা নিয়ে দেশ জুড়ে রীতিমতো আলোচনাও হয়েছিল। এমনকি সংবাদ শেয়ার করা বন্ধ করে দেয় ফেসবুক। পরে সমঝোতার ভিত্তিতে কিছু সংশোধনী এনে,পাস হয় আইনটি।

অতিপাঠ্য সংবাদের জন্য গুগল বিজ্ঞাপন পায়। বড় বড় সংস্থা গুগলকে ওই সংবাদ কনটেন্টটির জন্য বিজ্ঞাপন দেয়। ফেসবুকে বিষয়টি আরো সহজ। এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তাদের নেটওয়ার্কে যে খবরগুলি থাকে, তার জন্য বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে। যে বিজ্ঞাপন তারা পায়, তার লাভ্যাংশ সংবাদসংস্থাটিকে দেওয়া হয় না।

ফলে এই আইনটিকে ঐতিহাসিক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর সংশোধনীতে জোর দেয়া হয় সংবাদ ব্যবসার জন্য ন্যায্য পারিতোষিক নিশ্চিত করার মাধ্যমে সাংবাদিকতাকে টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতার ওপর। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী ফেসবুক থেকে পাঠক যে সংবাদটি পড়বেন, তার জন্য অর্থ পাবে সংবাদটি তৈরি করা গণমাধ্যমও। সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ায় ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের লভ্যাংশও ভাগাভাগি হবে। এমন আইন বিশ্বে প্রথম হলেও ধারণা করা হচ্ছে, অন্যান্য দেশও একই ধরনের আইন করতে পারে। ইতিমধ্যে কানাডাও জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার মতো পদক্ষেপ তারাও নেবে।

আইনে অবশ্য বলা আছে, সংবাদ সংস্থার সঙ্গে আদালতের বাইরেও বোঝাপড়া করে নিতে পারবে ডিজিটল প্ল্যাটফর্মগুলি। মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে এ কাজ করা যাবে। হুমকি দিলেও গুগল এবং ফেসবুক ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু সংবাদসংস্থা এবং সংবাদ গ্রুপের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

অস্ট্রেলিয়ার নতুন আইন সেই সমস্যা অনেকটাই দূর করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। একই সঙ্গে ফেক বা ভূয়া নিউজের উপরেও এর ফলে নিয়ন্ত্রণ আসবে বলে অনেকের ধারণা। ফেসবুক ও গুগল জানিয়েছে, আগামী তিন বছরে তারা পৃথকভাবে সারা বিশ্বে সংবাদ খাতে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার করে বিনিয়োগ করবে।