ফ্রি ফায়ার গেমের পক্ষে লড়তে হাইকোর্টে গ্যারিনা

অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের রুলে পক্ষভুক্ত হতে হাইকোর্টে আবেদন করেছে ফ্রি ফায়ার গেমসের প্রস্তুতকারী সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড।

গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড ব্যবসায়িকভাবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়, ফ্রি ফায়ার গেমের অসংখ্য প্লেয়ার বাংলাদেশে রয়েছে। আদালতের আদেশে ফ্রি ফায়ার গেমসের লিংক ব্লক করে দেয়ার কারণে গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড ব্যবসায়িকভাবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই রিট মামলায় গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড পক্ষভুক্ত হতে চায়।

গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেডের এই আবেদনের ওপর তিন দিন শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

১০ অক্টোবর, রবিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। অন্যদিকে গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার তানভীর কাদের।

গ্যারিনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেডের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের রিটে পক্ষভুক্ত হতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত এই আবেদনের আদেশের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন রেখেছেন। আদালত যদি তাদের পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন এরপর ফ্রি ফায়ার গেম চালু করতে তাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এর আগে, গত ১৬ আগস্ট সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অবিলম্বে পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তিন মাসের জন্য এসব গেম অনলাইনে বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে অনলাইন প্লাটফর্মে টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভসহ ক্ষতিকর অ্যাপ এবং পাবজি ও ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

গত ২৪ জুন অনলাইন প্লাটফর্মে টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভসহ ক্ষতিকর অ্যাপ এবং পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর গেম বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।

রিটে বিবাদী করা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব ও পুলিশের আইজিকে।

এর আগে গত ১৯ জুন ক্ষতিকর অ্যাপস-গেমস বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ারের মতো অ্যাপ ও গেমের মাধ্যমে দেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোরদের মানসিক অবক্ষয়সহ সামাজিক নানা ক্ষতির কথা তুলে ধরা হয়। শিশু-কিশোরদের এসব অনলাইন গেম ও ক্ষতিকর প্ল্যাটফর্মে আসক্তির কথাও উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেমস ও টিকটক, লাইকি, বিগো লাইভের মতো ক্ষতিকারক অ্যাপসগুলোকে অবিলম্বে অপসারণ করাসহ সব লিংক বন্ধের অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে এসব বিষয় মনিটরিংয়ের জন্য ও শিশুদের উপযোগী যেসব অনলাইন গেমস রয়েছে সেগুলো সুপারিশের জন্য একটি একটি মনিটরিং, ইভালুয়েশন ও সুপারিশ কমিটি গঠনের অনুরোধ করা হয়। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বলে জানান আইনজীবীরা।

সম্প্রতি নেপালে পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল।