বন্ধের তালিকায় ২ লাখ মোবাইল ফোন


বন্ধের তালিকায় ২ লাখ মোবাইল ফোন

ছবি : সংগৃহীত

 

অবৈধ হ্যান্ডসেটের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া কার্যক্রমের প্রথম পাঁচ দিনে ২ লাখ ৮ হাজার ৪টি অবৈধ হ্যান্ডসেট চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টারে (এনইআইআর) নিবন্ধিত না থাকায় শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব হ্যান্ডসেট চিহ্নিত করা হয়।

এরইমধ্যে চিহ্নিত হ্যান্ডসেটের অবৈধতার বিষয়ে গ্রাহকদের অবগত করা হয়েছে। এছাড়া, বেশ কিছু অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধ করা হবে।

অবৈধভাবে হ্যান্ডসেটের আমদানি বন্ধ, মোবাইল চুরি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে সম্প্রতি ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) প্রযুক্তি চালু করেছে বিটিআরসি। পরীক্ষামূলকভাবে গত ১ জুলাই থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলেছে এই প্রযুক্তির কার্যক্রম। ইতোমধ্যে বিটিআরসি জানিয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে দেশের নেটওয়ার্কে নতুন করে আর কোনো অবৈধ হ্যান্ডসেট সচল হচ্ছে না।

বিটিআরসি আরও জানায়, ১ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের নেটওয়ার্কে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৭ টি হ্যান্ডসেট যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বৈধ হ্যান্ডসেটের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৫৩টি ও অবৈধ হ্যান্ডসেট সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৪ টি।

নতুন প্রযুক্তি চালুর পর ১ অক্টোবর দেশের নেটওয়ার্কে ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৫টি নতুন হ্যান্ডসেট যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বৈধ ৭৮ হাজার ৮৭৬টি ও অবৈধ ৪৪ হাজার ১৯৯টি। ২ অক্টোবর দেশের নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৮৯টি হ্যান্ডসেট। এর মধ্যে বৈধ ৬৬ হাজার ৩২৬টি ও অবৈধ ৩৭ হাজার ৬৬৩টি। ৩ অক্টোবর নতুন করে ১ লাখ ২২ হাজার ৫৮৮টি হ্যান্ডসেট যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বৈধ হ্যান্ডসেট ৭৯ হাজার ৫৮৯টি ও অবৈধ ৪২ হাজার ৯৯৯টি। ৪ অক্টোবর নতুন করে ৬৬ হাজার ৫২টি হ্যান্ডসেট যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বৈধ ৪১ হাজার ৬০৫ টি ও অবৈধ ২৪ হাজার ৯৪৭ টি। ৫ অক্টোবর নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৫৫৩টি হ্যান্ডসেট। এর মধ্যে বৈধ ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৭টি ও অবৈধ হ্যান্ডসেট ৫৮ হাজার ১৯৬ টি।

বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, অবৈধ হ্যান্ডসেটগুলোকে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে যাচাই করে দেখা যায় ওই হ্যান্ডসেট গুলো বৈধ নয়। অবৈধ হ্যান্ডসেট গুলো যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিছু কিছু হ্যান্ডসেট র্যান্ডমলি বন্ধ করা শুরু হয়েছে, যেন গ্রাহকরা সচেতন হোন যে অবৈধ সেট কেনা যাবে না। গ্রাহকরা যেন অসুবিধায় না পড়ে তাই সব সেট একসঙ্গে বন্ধ করা হচ্ছে না। তাদের সময় দেয়া হচ্ছে তারা যেন হ্যান্ডসেটটি দোকান থেকে পরিবর্তন করার সুযোগ পায়। অথবা টাকা ফেরত নিয়ে আসতে পারে। বিটিআরসি কোনোভাবেই গ্রাহকের ভোগান্তি চায় না। এই সুযোগ ভবিষ্যতে থাকবে না, তখন হ্যান্ডসেট অবৈধ শনাক্ত হওয়া মাত্রই তা বন্ধ হবে।

বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেটের বিষয়ে বলা হয়, বিদেশ থেকে আনা বা উপহারে পাওয়া মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের নেটওয়ার্কে চালু হওয়া অবৈধ সেটও আর বন্ধ হবে না। তবে সেগুলো অবৈধ সেটের তালিকাতেই থাকবে।

হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাইয়ের বিষয়ে বিটিআরসি জানায়, নির্দিষ্ট একটি নম্বরে মেসেজ পাঠিয়েই জানা যাবে সেটটি বৈধ না অবৈধ। মোবাইল ফোনর মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD লিখে একটি Space দিয়ে ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বরটি লিখে (উদাহরণ— KYD 123456789012345) ১৬০০২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি মেসেজে জানিয়ে দেওয়া হবে সেটটি বৈধ কি না। এছাড়াও neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করেও বৈধ বা অবৈধ সেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। একইসঙ্গে রেজিস্ট্রেশনের পদ্ধতিও সেখানে দেয়া রয়েছে।