এ বছর ৫০ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে: আরএসএফ


এ বছর ৫০ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে: আরএসএফ

২০২০ সালে বিশ্বের ৫০ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডারস (আরএসএফ) এ তথ্য জানিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে জানায়, এ বছর অনুসন্ধানী  দুর্নীতি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদেরই বেশি হত্যা করা হয়েছে। 

আরএসএফ তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে জনায়, এ বছর ৮৪ শতাংশ সাংবাদিককে সরাসরি তাঁদের কাজের জন্য লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করা হয়েছে। আর ২০১৯ সালে ৬৩ শতাংশকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এদের মধ্যে মেক্সিকোতে আটজন, ভারতে চারজন, ফিলিপাইনে তিনজন ও হন্ডুরাসে তিনজন সাংবাদিককে মেরে ফেলা হয়।  
আরএসএফ বলেছে, ২০২০ এ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে পাঁচ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। আফগানিস্তান সরকার ও তালেবান জঙ্গিদের মধ্যে আলোচনা চললেও গত কয়েক মাসে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ভারতে ‘রাষ্ট্রীয় স্বরূপ’ পত্রিকার প্রতিবেদক রাকেশ ‘নির্ভীক’ সিংকে ডিসেম্বর মাসে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবর প্রকাশের জেরে তাকে হত্যা করা হয়। দেশটির তামিলনাড়ু রাজ্যে টিভি সাংবাদিক ইসরাভেল মোজেসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মেক্সিকোর পূর্বাঞ্চলের এলাকা ভেরাক্রুজে ‘এল মান্ডো’ পত্রিকার প্রতিবেদক জুলিও ভালদিভিয় রদর গুয়েজের মস্তকবিহীন লাশ পাওয়া যায়। এছাড়া পশ্চিমের এলাকা আকাপুলকোতে স্থানীয় সংবাদ ওয়েবসাইটের সম্পাদক পুনতো এক্স পুনতো নোতিসিয়াসের মরদেহের টুকরা টুকরা অংশ পাওয়া গেছে। দেশটিতে মাদক পাচারকারী ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে যোগসূত্র রয়ে গেছে। যেসব সংবাদকর্মী এসব নিয়ে কাজ করছিলো, তাঁদেরকে বর্বরভাবে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে, মেক্সিকোতে সাংবাদিক হত্যায় জড়িত কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে আরএসএফ।

১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্ব জুড়ে সাংবাদিকদের ওপর ঘটে যাওয়া সহিংসতার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে আরএসএফ। সংস্থাটির এডিটর ইন চিফ অ্যাডেস মেভেল বলেন, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঘটনা কাভার করেন এমন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর সহিংসতা বেশি ঘটেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা ও ফ্রান্সে বিতর্কিত নতুন নিরাপত্তা আইনের কথা উল্লেখ করেছেন। 

আরএসএফ বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় এ বছর কিছু কম সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।  কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ বছর কম সংখ্যক সাংবাদিক মাঠে কাজ করেছেন। তবে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধিনিষেধের কারণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হয়েছে। আরএসএফ জানায়, এ বছর ৩৮৭ জন সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই হার অনেক বেশি। 

করোনার সংকটময় পরিস্থিতির খবর সংগ্রহ করায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে চীনের কথা উল্লেখ করেছে আরএসএফ। চীনের উহানে প্রথম করোনা সংক্রমণ শুরুর পর এ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা সাংবাদিক ঝ্যাং ঝানকে (৩৭) গতকাল সোমবার চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের জের ধরে গত মে মাসে গ্রেফতার করা হয় তাকে। 


খবর সূত্র: এএফপি