করোনা নিয়ে রিপোর্ট করায় সাংবাদিকের জেল 


করোনা নিয়ে রিপোর্ট করায় সাংবাদিকের জেল 

উহানে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে ‘সিটিজেন জার্নালিস্ট’ খ্যাত ঝাং ঝানকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে চীন। আজ সোমবার ৩৭ বছর বয়েসী এই নারী সাংবাদিকের বিচার শুরু হয়।

ঝ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, লেখনি, ভিডিও এবং অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে উইচ্যাট, টুইটার এবং ইউটিউবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন ঝ্যাং। এছাড়াও বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে উহানের ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাজেভাবে তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর এসব অভিযোগের জন্য আজ তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হলো।

প্রতিবেদন প্রকাশের জের ধরে গত মে মাসে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। তখন থেকে কারাগারে আছেন তিনি। সোমবার সাংহাই কোর্টে হাজির করা হয় ঝাংকে। 

গত ফেব্রুয়ারিতে করোনাভাইরাস নিয়ে রিপোর্ট করতে উহান সফরে যান ঝাং। সেখান থেকে তিনি যেসব রিপোর্ট করেছেন তা ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার হয়েছে। এর ফলে চীনা কর্তৃপক্ষের বাঁকা চোখে পড়ে যান তিনি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, চীনে কোনো মিডিয়াই স্বাধীন নয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারি প্রচেষ্টার সমালোচনা বা সরকারের মর্যাদা খর্ব হয় এমন কোনো রিপোর্ট দেখলে সংশ্লিষ্টদের কড়া হাতে দমন করে চীন।

নেটওয়ার্ক অব চাইনিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারর্স (সিএইচআরডি) নামে একটি চীনা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জানায়, চীনে নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের আটক রাখার বিষয়েও ঝ্যাং রিপোর্ট করেছিলেন। এছাড়া ভিকটিম পরিবারগুলো যে হয়রান হচ্ছে, তা নিয়েও রিপোর্ট করেছিলেন এই সাংবাদিক। এরপরই ১৪ মে উহান থেকে তিনি নিখোঁজ হন তিনি। এর একদিন পরে পুলিশ তাকে উহান থেকে ৪০০ মাইলেরও বেশি দূরে সাংহাইয়ে আটক দেখায়।

ঝ্যাং ঝানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে চার্জ গঠন করা হয় নভেম্বরের শুরুর দিকে। এতে অভিযোগ করা হয় যে, তিনি টেক্সট মেসেজ, ভিডিও ও অন্যান্য বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাট, টুইটার এবং ইউটিউবের মতো প্লাটফর্মে। এ ছাড়া তিনি বিদেশি মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এসব অভিযোগে তার চার থেকে ৫ বছরের জেল সুপারিশ করা হয়।

তবে বরাবরই এসব অভিযোগ নাকচ করে এসেছেন চীনের এই নারী সাংবাদিক। গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঝ্যাং অনশনও করেন। বিচারের রায় শোনার পর মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েন তিনি। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, ঝাংয়ের শারিরীক অবস্থায় অত্যন্ত নাজুক। মাথাব্যথা, দুর্বলতা এবং পেটের পীড়ায় ভুগছেন ঝ্যাং। অন্যের সহয়তা এছাড়া চলাফেরা করতে পারছেন না। এসব কারনে বিচার স্থগিত রাখার জন্য আবেদন করেছিলেন বলেও জানান ঝ্যাংয়ের আইনজীবী।