নিজেদের রক্ষায় আফগান গণমাধ্যমকর্মীদের খোলা চিঠি


নিজেদের রক্ষায় আফগান গণমাধ্যমকর্মীদের খোলা চিঠি

ছবি : সংগৃহীত

 

তালেবানের হুমকি থেকে নিজেদের রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন আফগানিস্তানে কর্মরত সাংবাদিক, ক্যামেরাম্যান এবং ফটোগ্রাফাররা।  জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংগঠন এবং মিডিয়া-সমর্থিত সংগঠনগুলোর কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে খোলা চিঠি লিখেছেন তারা।

১৫০জন সাংবাদিক স্বাক্ষরিত ওই চিঠি গত শনিবার প্রকাশিত হয়। আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ ৩০ আগস্ট, সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

চিঠিতে মিডিয়া কর্মীদের পাশাপাশি তাদের পরিবার ও সম্পত্তির ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ ও হুমকির কথা বিবেচনা করে জাতিসংঘ এবং দাতা দেশগুলোর কাছে নিজেদের জীবন ও পরিবারের সদস্যদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান সাংবাদিকরা।

চিঠিতে গণমাধ্যমকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি না দেখে বরং বাক স্বাধীনতার জন্য গত দুই দশক ধরে কাজ করে আসা আফগান সাংবাদিকদের রক্ষায় বিশ্বকে উদ্যোগ নেয়া উচিত’।

চিঠিতে সাংবাদিক আহমাদ নাভিদ কাওশ বলেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বিশ্বকে আমাদের জীবন এবং পরিবার রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে’।

বিশ্বকে অবশ্যই তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে হবে উল্লেখ করে আরেক সাংবাদিক রাফিউল্লাহ নিকজাদ বলেন, ‘আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করছি। আমরা জানি না ভবিষ্যতে কী হবে’।

আফগান সরকারের পতনের পর গত ১৫ আগস্ট এই চিঠি আসে। সরকার পতনের পর দেশটিতে অসংখ্য সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমকর্মী বিশেষ করে নারী সাংবাদিকরা কাজ করছেন না এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করছেন।

নারী সাংবাদিক নাজিফা আহমাদি তাদের একজন। তিনি তার মিডিয়া কোম্পানি বন্ধ হওয়ার পর থেকে আর কাজ করছেন না।

আহমাদি বলেছেন, পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন এবং জানেন না কীভাবে তার পরিবারের ভরণপোষণ করবেন।

তিনি বলেছেন, ‘অসংখ্য সাংবাদিকের ভাগ্য জানা নেই। তালেবানের উচিত নারী মিডিয়া কর্মীদের কাজ করতে দেয়া। কারণ, তাদের বেশিরভাগই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী’।

নারী স্বাধীনতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছুদিন আগে তালেবান শাসিত আফগানিস্তান ছেড়েছেন তালেবান মুখপাত্রের সাক্ষাৎকার নিয়ে আলোচনায় আসা সেই সাহসী নারী সাংবাদিক বেহেস্তা আরঘান্দ।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান শাসনের সময় মুখ থুবড়ে পড়েছিল আফগানিস্তানের গণমাধ্যমগুলো। তখন ভয়েস অব শরিয়া নামে একটি মাত্র রেডিও স্টেশন ছিল। সেখানে শুধু ইসলামিক অনুষ্ঠান প্রচার করা হতো।

সেসময় টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য বিনোদনের মাধ্যমকে ইসলামি মতাদর্শের বিরোধী বলে গণ্য করা হতো।

এমনকি কেউ টেলিভিশন দেখলে তাকে শাস্তি দেয়া হতো এবং টিভি ভেঙে গুঁড়ো করে দেয়া হতো। ভিডিও প্লেয়ারের মালিককে গণপিটুনি দেয়ার মত ঘটনাও ঘটত।