মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বড় বাধা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন


মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বড় বাধা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ছবি-সংগৃহীত

 

সিউল আহমেদ, বিজেসি নিউজ: দুটি কারণে বাংলাদেশে অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রেকর্ড হারে কমছে। প্রথমত, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ধরপাকড় জারি রেখেছে সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং দ্বিতীয়তটি, ক্রমেই অভিনব সব উপায়ে সরকারি নজরদারির খবর আসছে সামনে। মার্কিন অলাভজনক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে, ডিজিটাল জীবনমান সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। ১১০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০৩। আর এশিয়ার ৩২টি দেশের মধ্যে ৩০ তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সার্ফশার্কের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্টারনেট কেনার সামর্থ্য, ই-নিরাপত্তা, ডিজিটাল মান, ইন্টারনেটের মান, ই-অবকাঠামো ও ই-সরকারকে মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে এই জরিপ করা হয়েছে।

তাদের ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২১’ প্রতিবেদনে ইন্টারনেটে বাকস্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছে ৪০ পয়েন্ট। গত বছর এই পয়েন্ট ছিল ৪২। সর্বমোট ১০০ পয়েন্টে এই পয়েন্ট পায় বাংলাদেশ।

প্রাপ্ত পয়েন্টের ভিত্তিতে দেশগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে সংগঠনটি। পয়েন্ট ১০০ থেকে ৭০-এর মধ্যে থাকলে ‘মুক্ত’, ৬৯ থেকে ৪০-এর মধ্যে থাকলে ‘আংশিক মুক্ত’ এবং ৩৯-এর নিচে হলে ‘মুক্ত নয়’। বাংলাদেশের অবস্থান আংশিকমুক্ত শ্রেণির তলানিতে।

 

ছবিতে 'ডিজিটাল কোয়ালিটি অব লাইফ ইনডেক্স ২০২১' জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান

২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বরাবরই আংশিকমুক্ত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ৭০টি দেশের ওপর ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এতে ইন্টারনেটে স্বাধীনতার স্তর নির্ণয়ে সেবা ব্যবহারে বাধা, কনটেন্টের সীমাবদ্ধতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন এই ৩ ধরণের মোট ২১টি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদনে ২০২০ সালের ১ জুন থেকে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত ঘটনাবলী বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে— রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে থ্রি–জি ও ফোর–জি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়। প্রায় এক বছর পর ২০২০ সালের আগস্টে তা আবার চালু করা হয়।

এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্চে যখন বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন চলমান আন্দোলনে তিন দিনের জন্য ফেসবুক ও ফেসবুক মেসেঞ্জার বন্ধ করে দেয়া হয়।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে আল–জাজিরা ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি নজরদারি সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নজরদারি, হ্যাকিং ও মুঠোফোন থেকে তথ্য সংগ্রহের প্রযুক্তি কিনেছে বাংলাদেশ।

এছাড়াও প্রতিবেদনে উঠে আসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনটির বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবাদ শুরু হয়। করোনা মোকাবিলায় সরকারের সমালোচনা করে দেয়া ফেসবুক পোস্টের জেরে গত বছরের মে মাসে আটক হোন মুশতাক।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে ২০২০ সালের প্রথম ৯ মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮শ'র বেশি মামলা হয়েছে। এছাড়াও সরকারের সাইবার ট্রাইব্যুনালের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের অক্টোবরে আইনটি প্রণয়ন হয়। এরপর থেকে প্রায় দুই হাজার মামলা দায়ের হয়েছে।

 

ছবি- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে (সংগৃহীত) 

প্রতিবেদনে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের ছিলো নয়টি সূচক। এর মধ্যে সাতটি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে বাধা, ওয়েবসাইট বন্ধ, ইন্টারনেট বন্ধ, সরকারপন্থী ভাষ্যকার, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আটক, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও কারিগরি হামলা।

লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ‘বাংলাদেশ: ভিন্নমতের কোনো স্থান নেই—অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অভিযান’ শিরোনামে ২৬ জুলাই প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।

 

ছবি-সংগৃহীত

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় কর্তৃপক্ষ যে ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে তা থেকেই স্পষ্ট, বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো কিছুর প্রতিবাদ করা বা ভিন্নমত পোষণ কতোটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরণের মত প্রকাশে এমন অন্যায্য বিধিনিষেধ আরোপ বাংলাদেশি সমাজের সর্বস্তরে ভয়ের বার্তা ছড়িয়েছে এবং স্বাধীন মিডিয়া ও সুশীল সমাজের কাজের পরিসরকে সংকুচিত করেছে। কেবল নিজেদের মতপ্রকাশের অধিকার চর্চার কারণে যেসব মানুষকে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ বন্দি করেছে তাদের অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে।’

সাদ হাম্মাদি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ যাবতীয় আইনকে আইসিসিপিআরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে ২০১৮ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্য দেশের যেসব সুপারিশ তারা গ্রহণ করেছিলেন সেগুলোর বিষয়ে আমরা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।’

গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে সাদ হাম্মাদি বলেন, ‘শুধু মতপ্রকাশের অধিকারের চর্চা করায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মুক্তি দেয়া হোক’।

 

ছবি- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে (সংগৃহীত) 

এদিকে, বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়াতে কমেন্টস করেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হয়েছে। ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস সিকদারের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। ফেসবুকে দেয়া একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সারমিন মৌসুমি কেকা ঝালকাঠি থানায় এ মামলা করেন। সাংবাদিক আক্কাস সিকদার চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি।

এছাড়াও মেয়রের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এক সাংবাদিককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক এম এ সবুর রানা যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক লোকসমাজের রামপাল প্রতিনিধি ও রামপাল প্রেসক্লাবের সভাপতি।

খবর নিয়ে জানা যায় গত ১৮ এপ্রিল এনটিভির খুলনা প্রতিনিধি আবু তৈয়ব মুন্সির ফেসবুক আইডি থেকে খুলনা সিটি মেয়রের বিপক্ষে একটি স্ট্যাটাস দেয়া হলে ২০ এপ্রিল মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনা সদর থানায় দুজন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

এ মামলায় সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সি গ্রেপ্তার হওয়ার ২১ দিন পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হোন। সাংবাদিক সবুর রানা জামিনের জন্য আদালতে হাজির হলে আদালাত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। পরে জামিন নামঞ্জুরের বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী বেলাল হোসেন উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন বলে জানান।

এদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের তথ্যমতে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া ১৮৮ টি মামলার ঘটনা রেকর্ড করেছে। এসব মামলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৩৫৩ জন ব্যক্তি অভিযুক্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ২৫ টি ক্ষেত্রে ৪৮ জন সাংবাদিক রয়েছেন। অভিযুক্ত সাংবাদিকদের মধ্যে ১১ জনকে অবিলম্বে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এছাড়া, ২০২০ সালের ৩৬৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১৯৭ মামলার তথ্য রেকর্ড করা হয়। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে মামলার সংখ্যা ছিল কম। এই দুই বছরে মামলা হয় ১০০টি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪শ ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং প্রায় ২ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১ হাজার ৩শ টি মামলা করা হয়েছে।

 

ছবি-সংগৃহীত

আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক ফারুক ফয়সলের সাথে বিজেসি নিউজের কথা হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘করোনাকালে সরকার নানা অজুহাত দেখিয়ে তথ্য পাওয়ার অধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। এমনকি করোনা ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য সেবা ও টিকা বিষয়ে সরকার অনেক সময় ভুল ও অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের চিহ্নিত অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সরকার উল্টো সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপরই খড়গহস্ত হয়েছে’।

সরকার এসব তথ্য সঠিকভাবে প্রকাশ করলেও সরকারের জন্যই ভালো হতো বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন ফারুক ফয়সল। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ শতবছরের পুরনো দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনের অপব্যবহার হচ্ছে।  তথ্য পাওয়া নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার। একইভাবে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও গোপনীয়তার সমান অধিকারও নাগরিকের রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রায়ই ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে আড়িপাতা এবং গোপন ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ার মতো উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে প্রস্তাবিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ ব্যক্তিতথ্য সুরক্ষার নামে বিরুদ্ধ মত নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে ও স্বাধীন মতপ্রকাশ আরও বাধাগ্রস্ত করবে বলে জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে’।

এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া আইন আসছে বলেও জানান তিনি। এই আইন হলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আরো খর্ব হবে বলেও মনে করেন তিনি।  

এদিকে, বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এই আইনের কিছু ধারা পরিবর্তন করতে হবে। এই আইনের ফলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হুমকির মুখে বলেও জানান তিনি।

রেজোয়ানুল হক আরো বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে অনেকেই দেশবিরোধী মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছেন। এর ফলে দেশে বিভিন্ন বিশৃখলা ও দেশের মর্যাদাও কমে যাচ্ছে'।

তাই এই আইনের সঠিক ব্যবহার করারও আহ্বান জানান জ্যেষ্ঠ এই সাংবাদিক।

এদিকে, গত বছর করোনার সময়ে আটক করা হয়, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সংগঠনের অর্থ বিষয়ক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়াকে। পরে তার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করা হয়। তার সাথে বিজেসির নিউজের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘জনগণকে দমন করা এবং জনগণ যেনো কথা বলতে না পারে এজন্যই এমন আইন করা হয়েছে। আর এতে সরকার এবং রাষ্ট্রের লাভ হচ্ছে। সরকার নিশ্চিত করতে চায়, জনগণ যাতে একত্রিত হয়ে কথা বলতে না পারে’।

 

ছবি-সংগৃহীত

তিনি আরো বলেন, ‘এই আইনের মামলাতে আসামিকে অনেক দিন আটক থাকতে হয়। এতে ব্যক্তির পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরিবারকে’।

দিদারুল বলেন, ‘এই মামলায় আমি একদিন গুম ছিলাম। ফলে পরিবারের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ অবস্থায় চলে যায়। আমার পরিবারের মামলাও প্রথমে নিতে চায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখনো আমার এবং আমার পরিবারের উপর চাপ আছে। স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে এখনো আমরা বঞ্চিত’।

তাকে প্রশ্ন করা হয় কেনো তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিলো। উত্তরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রচিন্তা নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য ছিলাম আমি। করোনার শুরুর দিকে করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতা নিয়ে আমরা সমালোচনা করেছিলাম। করোনা মোকাবিলায় সরকারের যে ব্যর্থতাগুলো ছিল সেগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরেছিলাম গবেষণার মাধ্যমে। আমাদের ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় এবং আমাকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়’।

এই আইন অবিলম্বে বাতিল করারও আহ্বান জানান তিনি।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট রয়েছে। তবে সবাই বলছে একই সাথে অবাধ বাক বা মতপ্রকাশের অথবা সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা দেয়া অনেক সময়ই দেশের জন্য হুমকিস্বরুপ। আবার একই সাথে এ আইনের অপপ্রয়োগ না করারও আহ্বান জানানো হয়। এছাড়াও কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।